পুরুষের শেভ করা কমছে, দুঃশ্চিন্তায় জিলেট কোম্পানি!

বলা হয়, ওল্ড ইজ গোল্ড। বর্তমান মানুষ আবার সেই পুরাতন রুপেই নিজের স্টাইল খুঁজে নিচ্ছে। কিছুদিন আগেও যেখানে পুরুষরা দাড়ি শেভ করে কর্মস্থলে যাওয়াকে আপডেট মনে করতেন । এখন তার হার কমেছে। আর এতে করে বিপাকে পড়ছে শেভিং ব্লেড প্রস্তুতকারক কোম্পানি জিলেট।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন মানুষ আবার দাড়ি রেখেই অফিসে আদালতে যাওয়াকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। আর সে কারণে পুরুষরা শেভ করা কমিয়ে দিচ্ছে।

“বিশেষ করে আমেরিকান পুরুষদের মধ্যে বিষয়টি বেশ পরিলক্ষিত হচ্ছে। যারা কাজে যোগ দেয়ার আগে দিনে অন্তত একবার দাড়ি কামাতেন, তারা এখন দাড়ি রাখাকেই ফ্যাশন মনে করছেন। তারা এখন বিভিন্ন আকারে দাড়ি রাখছেন, কারও মুখ ভর্তি দাড়ি, কারও ছাগলে দাড়ি আবার কারও খোঁচা খোঁচা দাড়ি।”

জিলেটের মূল প্রতিষ্ঠান প্রক্টার অ্যান্ড গ্যাম্বল (পিজি) এর দক্ষিণ আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট মিসিমিলিয়ানো মিনোজ্জি বলেন, মানুষের কাছে এখন দাড়ি না কামানোটা এক ধরনের অভ্যাসে রূপ নিচ্ছে। অনেকে প্রতিদিন তো দূরে থাক সপ্তাহে একবারও দাড়ি কামান না।

কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, মানুষ এখন আর দাড়ি না কামানোকে নেতিবাচক হিসেবে দেখে না। আবার কেউ যদি কখনো দাড়ি কামাতে ভুলে যান তাহলে তাকে অলস বলা কিংবা অসম্মানজনকও কিছু বলেন না।

কিন্তু মানুষ দাড়ি কমানো কমিয়ে দিলে ব্লেড কোম্পানিগুলোর কী হবে?

তবে অন্যরা কী করবে সেটা ভেবে বসে নেই জিলেট। সমাজে যেভাবে শেভহীনতাদের সংখ্যা বাড়ছে সেটার সঙ্গে তাল মেলানোর চেষ্টা করছে তারাও। একইসঙ্গে নিজেদের ব্লেডের বিক্রি বাড়াতে নানা ধরনের কৌশলের উপর জোর প্রয়োগ করছে বলেও জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা জন মুয়েলার।

বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান মিনটেলের আবাসন ও ব্যক্তিগত যত্ন বিশ্লেষক অলিভা গুইনাফ বলেন, বয়সভেদে মানুষের দাড়ি কামানোর প্রবণতা একেক রকম। তবে ৪৫ বছর বয়সের নিচের পুরুষরা এটাকে গা ছাড়া বিষয় হিসেবে দেখে। মানুষ নিজেদেরকে শান্ত চেহারার আকৃতি দিতে চায় এবং এদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। শুধু তা-ই নয়, অনেক মানুষই বিশ্বাস করে, মুখে দাড়ি রাখা খুবই জনপ্রিয়, প্রকৃতিক এবং আকর্ষণীয় একটি বিষয়।

জিলেট এক জরিপে দেখিয়েছে, প্রতি সপ্তাহে মানুষের দাড়ি কমানোর সংখ্যা ৩ দশমিক ৭ থেকে ৩ দশমিক ২ এ নেমে এসেছে। এসব মানুষের কেউ মাসে দুইবার অথবা তারও কম দাড়ি কামান। যুক্তরাষ্ট্রে গত তিন বছর ক্রমাগত ব্লেড ও রেজার বিক্রি কমেছে। তবে সেই কমার সংখ্যাটা খুব কম হলেও সেটা দৃশ্যমান।

তবে এটা মোকাবেলা করার জন্য জিলেট নতুন নতুন ব্লেড ও রেজার বাজারে ছাড়ছে। একইসঙ্গে কমাচ্ছে দামও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *