ট্রেনের টিকিটের জন্য হাহাকার শেষদিনেও দীর্ঘ লাইন

ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য হাহাকার চলছে। সড়কে দুর্ভোগের শঙ্কায় যাত্রীরা ট্রেনের টিকিটের জন্য ভিড় করছেন কমলাপুর স্টেশনে। গতকাল ছিল ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির পঞ্চম ও শেষদিন। দেয়া হয় ২১শে আগস্টের টিকিট। রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে টিকিট কাউন্টারগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। কানায় কানায় পূর্ণ কমলাপুর রেলস্টেশন।সবাই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন টিকিটের অপেক্ষায়। এদের মধ্যে কেউ এসেছেন শনিবার রাতেই। কিন্তু লাইনে থাকা সবার উদ্বেগ একটাই কাঙ্ক্ষিত টিকিট পাবো তো।

এদিকে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষার পর অনেকে কাঙ্ক্ষিত টিকিট হাতে পেয়ে আবার উচ্ছ্বসিত হয়েছেন। চোখে-মুখে ছিল হাসির বন্যা। লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীরা রেলওয়ে কর্মকর্তাদের অদক্ষতার কারণে ধীরগতিতে টিকিট দেয়ার অভিযোগও করেছেন। ঈদের সময় মহাসড়কে যানজট, দুর্ঘটনা ও নানা দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ট্রেনের টিকিটের প্রতি নগরবাসীর ঝোঁক বেশি থাকে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, সকাল আটটায় টিকিট বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু ভোর থেকে কমলাপুর স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে লাইন ধরে বসে পড়েন অনেকে। সকাল আটটায় টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার আগেই প্রতিটি কাউন্টারের সামনে অপেক্ষমাণ লোকদের সারি আঁকাবাঁকা হয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফরম ছাড়িয়ে যায়। সবার অপেক্ষা কখন বাজবে সকাল ৮টা। এদিকে কাঙ্ক্ষিত ট্রেনের টিকিট না পেয়ে অনেকে খালি হাতে বাসায় ফিরেছেন কমলাপুর স্টেশন থেকে। এমন একজন আবদুল মালেক। তিনি রাজশাহীর সিল্কসিটি ট্রেনের টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। কমলাপুর রেলস্টেশনে ২৬টি কাউন্টারে পঞ্চম দিনের মতো বিক্রি হয় অগ্রিম টিকিট। টিকিটের জন্য সারা রাত অপেক্ষার পর যখন সকাল ৮টায় টিকিট বিক্রি শুরু হলো, তখন প্রতিটা কাউন্টারের সামনেই মানুষের দীর্ঘ সারি। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনগুলোর কাউন্টারের সামনে টিকিট প্রত্যাশীদের ভিড় বেশি। লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন কামাল হোসেন। ঈদের আগের দিন রংপুর যাবেন তিনি।

এসেছেন রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কাটতে। কিন্তু তিনি যখন এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন তখন প্রায় সকাল ৮টা বাজে। আর ততক্ষণে উত্তরবঙ্গগামী কাউন্টারগুলোর সামনে মানুষ আর মানুষ। টিকিট প্রত্যাশীদের লাইন কাউন্টারের সামনে থেকে বাইরের রাস্তায় গিয়ে ঠেকেছে। তিনি তখন সেই লাইনেরই পেছনের দিকে। বলছেন টিকিট পাওয়া না পাওয়ার উদ্বেগের বিষয়টি। সার্বিক বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, সকাল থেকেই প্রতিটি কাউন্টারের সামনে টিকিট প্রত্যাশী মানুষের ভিড়। যাত্রী চাপের কথা মাথায় রেখে প্রতিটি ট্রেনেই অতিরিক্ত বগি সংযুক্ত করা হবে। অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ রেলওয়ের নিজস্ব বাহিনী তৎপর রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *