ভারতের লোকসভার সাবেক স্পিকার সোমনাথ আর নেই

ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার প্রথম বাঙালি সাবেক স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় আর নেই। আজ সোমবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এসময় তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। খবর জি নিউজের।

কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিল সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। চিকিৎসার জন্য তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। শুক্রবার থেকেই তার শারীরিক অবস্থা অবনতি হতে শুরু করে। রোববার তার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য সমস্যার জন্য তাকে ভেন্টিলেশনে দেয়া হয়। ডায়ালিসিসও করতে হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসার ধকল তিনি নিতে পারলেন না।

টানা ৪০ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর গত ১ আগস্টই তিনি বাড়ি ফেরেন। মঙ্গলবার ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। আবারও তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে তিনি ফের হৃদরোগে আক্রান্ত হন।

সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে মোদি লিখেছেন- দেশের রাজনীতিতে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন এক বিরাট ব্যক্তিত্ব। সংসদীয় রাজনীতিতে তিনি ছিলেন এক বলিষ্ঠ কণ্ঠ। তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ লিখেছেন- সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে দেশ ও পশ্চিমবঙ্গ একজন বিশিষ্ট মানুষকে হারালো।

শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও। তিনি লিখেছেন, বিশিষ্ট প্রবীণ রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও লোকসভার সাবেক স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে আমি গভীর শোকাহত। তার আত্মীয়-পরিজনসহ সব অনুরাগীকে আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।

দলের সাবেক সঙ্গীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সাংসদ মোহাম্মদ সেলিম। এই সাংসদ বলেন, তিনি ছিলেন অভিভাবকের মতো। সংসদীয় রাজনীতিতে নক্ষত্রের পতন হলো। আমাকে বারবার ফোন করে বলতেন দলটাকে বাঁচাও। রাজ্যকে বাঁচাও।

সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন দেশের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল তাকে দেশের সেরা লোকসভা স্পিকার বলে বর্ণনা করেছেন। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী টুইট করেছেন, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন এক প্রতিষ্ঠানের মতো।

তৃণমূল সাংসদ শুখেন্দুশেখর রায় বলেন, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে একজন প্রথিতযশা আইনজীবী হিসেবে দেখেছি। লোকসভার স্পিকার হিসেবে তার ভূমিকা ছিল অনবদ্য। লোকসভায় সব দলের সাংসদদের সমান সুযোগ তিনি দিয়েছিলেন। এখানেই তিনি অনন্য।

অন্যদিকে সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, অন্য দলের সদস্য তবে সিস্টেমের পক্ষে ছিলেন। দল তাকে যোগ্য সম্মান দেয়নি। শেষ মুহূর্তে তাড়িয়ে দিয়ে অপমান করেছে।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার বিশিষ্ট সিপিএম নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে লোকসভার স্পিকার বানিয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *