সরকার কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার অপ্রপয়োগ করছে বলে অভিযোগ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। সকল শিক্ষার্থীকে ঈদের আগেই মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি। গতকাল দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে সমিতির পক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জয়নুল আবেদীন বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি আইনটি একটি বিতর্কিত আইন। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সরকার এই আইন ব্যবহার করছে। সরকার এই আইনের অপপ্রয়োগ করছে।
তিনি বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা দেয়া হয়েছে।ভারতে এক রিটের মাধ্যমে এ ধরনের আইন বাতিল করা হয়েছে। এখানেও ৫৭ ধারা বাতিল চেয়ে একটি রিট মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তা সত্ত্বেও এই আইনের অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই আইনটি করার সময় আমাদের, আপনাদের (সাংবাদিক) আপত্তি ছিল যে, এই আইনের অপপ্রয়োগ হবে। এখন ঠিক তা-ই হচ্ছে।
জয়নুল আবেদীন বলেন, যে ছাত্রছাত্রীরা এ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল, তারা কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়ভিত্তিক সংগঠনের সদস্য ছিল না। তারপরও বিএনপি-জামায়াতকে জড়িয়ে এই আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য সরকার নানা কৌশল অবলম্বন করেছে। নামে-বেনামে অনেক মামলা দায়ের করেছে এবং আন্দোলনকারীরা গণগ্রেপ্তারের মূল লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি হেলমেটধারী সন্ত্রাসীরা ছাত্রছাত্রী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের গ্রেপ্তার করলেও আন্দোলকারীদের ওপর সহিংসতা চালানোর দায়ে কারো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী সমিতির সদস্য হিসেবে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ভূমিকা এবং পুলিশের অতিরিক্ত বল প্রয়োগের তীব্র নিন্দা জানাই। এই সহিংসতায় ছাত্রলীগের ভূমিকা এবং হেলমেটধারীদের বিষয়ে ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ন্যায্য আন্দোলন করতে গিয়ে বহু ছাত্রছাত্রী গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছে। অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এটা খুবই অমানবিক। অনতিবিলম্বে এসব শিক্ষার্থীকে মুক্তি দিয়ে এবং মামলা প্রত্যাহার করে তারা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদুল আজহা পালন করতে পারে সে ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান জয়নুল আবেদীন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট নাসরিন আক্তার, সিনিয়র সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।