দল নিয়ে জেমি ডে’র ব্যাখ্যা

ঘরের মাঠে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে আগামীকাল ভুটানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। তার আগে শেষ মুহূর্তে নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন মামুনুল-জামালরা। আগের দিন রাতে কোচ জেমি ডে ২০ সদস্যের দল চূড়ান্ত করেছেন। প্রাথমিক দল থেকে বাদ পড়েছেন ১০ জন। এনিয়ে বিতর্ক আছে বেশ। তিনমাসের অনুশীলন শেষে সেরা খেলোয়াড়দের নিয়েই বাংলাদেশ দল গড়েছেন-এমনটি দাবি জেমি ডের।
গত ১০ বছরে কখনো গ্রুপের সীমা টপকে সেমিফাইনালে পৌঁছতে পারেনি বাংলাদেশ। সর্বশেষ তিন আসরে ৯ ম্যাচ খেলে জিতেছে মাত্র একটি, ২০১৫ সাফে ৩-০ গোলে হারায় ভুটানকে। ৭ গোল দিয়ে খেয়েছে ১৬ গোল।তবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য এই আসরে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ। এর আগে কোচ ২০ সদস্যের যে দল ঘোষণা করেছেন তা নিয়ে উঠেছে নানা বিতর্ক। জাফর ইকবালের বাদ পড়া সোহেলের সুযোগ পাওয়া নিয়েও নানা কথা উঠছে। গতকাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সকালে চূড়ান্ত দল নিয়ে প্রথমবার অনুশীলনে নেমেছেন বাংলাদেশ কোচ। সাফে নিজেদের খেলার কৌশল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন অনুশীলনে। চূড়ান্ত স্কোয়াড নিয়ে উঠা বিতর্কের জবাব দিয়েছেন অনুশীলনের ফাঁকে। তার মতে সেরা খেলোয়াড়রাই চূড়ান্ত দলে জায়গা পেয়েছে, ‘এশিয়াডে যারা ভালো করেছে। তাদেরকেই স্কোয়াডে রাখা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ও নেয়া হয়েছে।’ জাফর ইকবাল-মতিন ও রহমত মিয়াদের বাদ পড়া নিয়ে কোচ বলেন, ‘সবাইকে তো দলে নেয়া যাবে না। সবাই যদিও পরিশ্রম করেছে। কিন্তু চূড়ান্ত স্কোয়াড গড়তে হলে কেউ না কেউ বাদ পড়বে। আমি মনে করি যাদের নেয়া হয়েছে তারা সবাই যোগ্য। সাফের পরই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ রয়েছে। সেখানে অন্যদের আবারো দলে ঢোকার সুযোগ আছে। আর সোহেলকে নেয়া হয়েছে অভিজ্ঞতার কথা বিবেচনা করে।’
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে বাংলাদেশ যখন তলানির দল তখন এশিয়ান গেমসের মতো আসরে ফলাফলে নতুন রেকর্ড, প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে। তাও আবার ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রায় ১০০ ধাপ সামনে থাকা কাতারকে হারিয়ে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে নতুন করে প্রত্যাশা সে কারণেই। এশিয়ান গেমসের ফলাফল বাদ দিয়ে সাফে তাকালে এটা পরিষ্কার এখানে বাংলাদেশকে টপকাতে হবে কঠিন পথ। সেটা কতটা কঠিন তা জানান দিয়েছে, শ্রীলঙ্কার প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে। উনিশ-বিশ অবস্থায় থাকা এ অঞ্চলের দলগুলোর লড়াই তাই কঠিনই হবে। যে কারণে সাফ নিয়ে অতি প্রত্যাশার বাণী শোনাতে চান না বাংলাদেশ জাতীয় দলের ইংলিশ কোচ জেমি ডে। ‘আমরা ১৫ বছর ধরে এ টুর্নামেন্ট জিততে পারি না। তাই আমি ছেলেদের বলেছি, আমরা নিজেদের সেরাটা দেবো যতটা সম্ভব ভালো করার জন্য। এ টুর্নামেন্টের দলগুলো আমাদের চেয়ে ভালো র‌্যাঙ্কিংয়ের দিক দিয়ে। এটা বাস্তবতা। এ বাস্তবতা মাথায় রেখেই আমাদের প্রত্যাশা করতে হবে’-বলেছেন জাতীয় দলের কোচ জেমি ডে।
তাই বলে তো আর সমস্যা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। যা আছে তাই দিয়েই সেরাটা আদায় করতে চাইবেন কোচ। দলটি তারুণ্য নির্ভর উল্লেখ করে জেমি ডে বলেন, ‘আমাদের দলটি তারুণ্য নির্ভর। তাদের জয়ের নেশা আছে, জয়ের সাধ্যও আছে।’
বাংলাদেশের ফুটবলে প্রধান সমস্যা ভালো মানের স্ট্রাইকার নেই। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচটি আরো একবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে। ‘স্কোরিং দুর্বলতা আমাদের বড় সমস্যা; কিন্তু এটা ৮-১০ দিনে দূর করা সম্ভব নয়। আমি যখন এখানে দায়িত্ব নেই তখন এ ইস্যুটা ছিল, এখনো আছে। কারণ, এখানে ঘরোয়া ফুটবলে ক্লাবগুলোয় বিদেশি খেলোয়াড়রা আক্রমণভাগে বেশি খেলেন। তাই রাতারাতি এ সমস্যার সমাধান আসবে না। তবে আমরা এ পজিশনে কিছু তরুণ পেয়েছি, যারা ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন। আশা করি, তারা গোলের সুযোগ পেলে কাজে লাগাতে পারবে’-বলেছেন জেমি ডে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *