বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও আসামের নাগরিকত্বপঞ্জী (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েছেন কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ। তাদের রয়েছে বৈধ অভিবাসন বিষয়ক সার্টিফিকেট। আসামের মরিগাঁও/কোকড়াঝাড় থেকে এ বিষয়ে খবর প্রকাশ করেছে অনলাইন লাইভমিন্ট। এতে এমনি বাদ পড়া একজন রত্না দাসের কথা তুলে ধরা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, রতœা দাস বিবাহিতা। তিনি তারপর ১৯৬৩ সালে আসামের মরিগাঁও চলে যান বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলা থেকে। সেখানে সাত মাস তিনি ও তার স্বামী অভয় দাস শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করেন। এরপর ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) তাদেরকে ‘হোম মাইগ্রেশন সার্টিফিকেটস’ অনুমোদন করেন।তারপর আসাম আন্দোলন জোরদার হয়। তখন রতœা দাস দম্পতি আসাম থেকে চলে যান ত্রিপুরা। ওই আন্দোলন, উত্তাপ প্রশমিত হলে তারা আবার আসামে ফিরে আসেন ১৯৮৫ সালে। তারা বৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন এবং সেখানে অনুমোদন পেয়েছেন। কিন্তু এনআরসির চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় তাদের নাম নেই। রত্না দাস একাই নন, এমন আরো প্রায় ১০ হাজার মানুষ আছেন আসামে। তাদের আছে ‘হোম মাইগ্রেশন সার্টিফিকেটস’। কিন্তু এনআরসিতে তাদেরম নাম নেই। আসাম সরকারের সিনিয়র এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেছেন, অনেক এমন ঘটনা আছে। তাতে দেখা যাচ্ছে ১৯৬৪ সালে ওই সব মানুষকে হোম মাইগ্রেশন সার্টিফিকেটস দিয়েছিলেন গোয়ালপাড়ার ডিসি। কিন্তু এসব এন্ট্রি ও সার্টিফিকেটগুলোকে স্বীকৃতি দেয় নি এনআরসি কর্তৃপক্ষ। কেন এমনটা হয়েছে তা আমরা জানি না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা এমনভাবে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন তারা এনআরসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন এবং তাদেরকে বিষয়টি পরিষ্কার করে বোঝাতে পারেন। গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ননি গোপাল মাহাতো বলেছেন, ১৫ রকমের ডকুমেন্টকে গ্রহণ করেছে এনআরসি কর্তৃপক্ষ। সীমান্তরক্ষীদের কাছে একটি নালিশ জানানোর জায়গা বা সেল আছে। যদি কোনো ব্যক্তির কোনো দ্বিধা থাকে তাহলে বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগে তাদেরকে সেখানে যোগাযোগ করা উচিত।
আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল কুমার মাহাতো বলেছে, অবৈধ অভিবাসীদের উপস্থিতির কারণে রাজ্যে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার ভাষায়, প্রথমে অবৈধ অভিবাসীরা নির্বাচনী ভোটার লিস্টে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ক করায়। তারপর আসামের লোকজনের জমি গ্রাস করতে শুরু করে। এতে কোকড়াঝাড় ও বনগাইগাঁওয়ের মতো এলাকার আদিবাসী মানুষগুলো দুর্ভোগে পড়েন।