হোটেলের ঘরের দরজা ভেঙে দেখা যায় টলিউড অভিনেত্রী পায়েল চক্রবর্তীর ঝুলন্ত দেহ। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির এয়ারভিউ মোড়ের চার্চ সংলগ্ন রোডের একটি হোটেলে। পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওই হোটেলের ১৩ নম্বর রুমে চেক-ইন করেছিলেন পায়েল। পরের দিন সকালে গ্যাংটক যাবার কথা থাকায় হোটেল কর্মীদের সকাল ৭টা নাগাদ তাকে ডেকে দিতেও বলেছিলেন। সে অনুযায়ী বুধবার সকাল সাতটায় তাঁকে হোটেলের কর্মীরা ডাকতে আসলে কোনও উত্তর না পাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে দরজা ধাক্কাতে থাকেন। এতেও কোন সাড়া না মিললে খবর দেওয়া হয় শিলিগুড়ি থানায়। পুলিশ আসার পর ভাঙা হয় ১৩ নম্বর রুমের দরজা। আর তখনই ঘর থেকে উদ্ধার হয় পায়েল চক্রবর্তীর ঝুলন্ত দেহ।
হোটেল কর্মীরা পুলিশকে জানান, মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত ফোনে চিৎকার করে কথা বলতে শোনা যায় পায়েলকে।এতটাই জোরে কথা বলছিলেন, যে ঘরের বাইরেও সেই আওয়াজ ¯পষ্ট শোনা যাচ্ছিল। তবে মৃত্যুর অন্য কোনও কারণ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, সোমবার শিমুরালিতে শুটিং শেষে মঙ্গলবার অন্য একটি শুটিং-এ রাঁচীতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকেই তাঁর ফোন বন্ধ মেলে। আর মেয়ের কোনও খোঁজ না পাওয়ায় ওই দিনই পায়েলের মা দক্ষিণ ২৪ পরগনার পঞ্চসায়র থানা এলাকায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
মেয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর পায়েলের বাবা প্রণব গুহ শিলিগুড়িতে পৌঁছে বলেন, ‘‘পায়েল বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিল। তবে তার জামাইয়ের বিরুদ্ধে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই।’’
প্রসঙ্গত, উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির পায়েলের ২০০৬ সালে বিয়ে হয়। তাঁর একটি নবছরের ছেলেও আছে। ২০১৫ সাল থেকে পুরো দমে অভিনয় শুরু করলে পরিবারকে সময় না দিতে পারার জন্য তার স্বামী ডিভোর্সের মামলা করেন। এর পর থেকে পায়েল একাই থাকতেন নিউ গড়িয়ার একটি ফ্ল্যাটে। আর টালিগঞ্জে তাঁর স্বামীর সঙ্গেই থাকতো তার ছেলে।
টেলিভিশনের পর্দায় বেশ জনপ্রিয় মুখ ছিলেন পায়েল চক্রবর্তী। ‘চোখের তারা তুই’ আর ‘রূপায়ণ’, এই দুই ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় দর্শকদের নজর কেড়েছিল। আসন্ন মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘কেলো’ তে অন্যতম মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এমনকি দেবের ‘ককপিট’ সিনেমাতেও তাকে দেখা যায়।