রাক্ষসী পদ্মা গিলে খাচ্ছে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। গত ৩-৪ দিন ধরে মোক্তাকারের চর, কেদারপুর ও ঘড়িষার তিনটি ইউনিয়নসহ নড়িয়ার পৌরসভার ২ ও ৪নং ওয়ার্ডের কয়েকশ’ একর ফসলি জমিসহ ১২টি গ্রাম বিলিন গেছে। আজও এই ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে মোক্তাকারের চরের শেহের আলী মাদবরের কান্দি, ইশ^র কাঠি, পাচু খাঁর কান্দি, কেদারপুর ইউপির ওয়াবদা, লঞ্চঘাট, সাধুর বাজার, লঞ্চঘাট, চর নড়িয়া, সাহেবর চর, চর জুজিরা/উত্তর কেদারপুর, দাসপাড়া, কেদারপুর, দেওয়া ক্লিনিক, রওশনারা শপিংমল, হেলথ কেয়ার ক্লিনিক, গাজী কালুর বাড়িসহ সাধুর ও ওয়াবদা বাজার ২-৩ শতাধিক দোকান ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া চর জুজিরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর কেদারপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘড়িষার ইউপির চন্ডিপুর, শ্রী সত্য নারায়ন মন্দির , পাঁচ গাও, নড়িয়ার মুলফৎ গঞ্জবাজার তিন শতাধিক দোকান ও বাসতলা বাজার আরো ১৭ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ৪৫টি বসত বাড়ি বিলিন হয়ে গেছে। অন্যদিকে কাঠ গাছের বাগান, পানের বরজ, একটি কলা বাগানসহ কয়েক একর ফসলি জমি পদ্মা নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে নড়িয়া উপজেলার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ৭ শতাধিক স্থাপনা বিলিন হয়েছে। বিলিন হয়ে গেছে নড়িয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্র এর নতুন ভবন, মসজিদ, গাড়ির গ্যারেজ, বসার স্থান।যে কোন মুহুর্তে রাক্ষসী পদ্মায় খেয়ে ফেলতে পারে নড়িয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্র এর মুল ভবনটি। এদিকে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নড়িয়া উপজেলার ৫ লক্ষাধিক মানুষ। নদী ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে মুলফৎগঞ্জ বাজারের ৮-৯শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সব সময়ের জন্য আতংকের মধ্যে থাকতে হয় ব্যবসায়ীদের। কেউ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি ঘর ছেড়ে যেত চায় না। গৃহীন হয়ে পড়েছে এলাকার প্রায় ৭ হাজার পরিবার।
খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। কেউ রাস্তার পাশে ঝুপড়ি করে আছে। নদী ভাঙ্গনের খবর ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিন পদ্মার পাড়ে ভিড় করছে হাজার হাজার মানুষ। বাসতলা এলাকার মন্নান ঢালীর স্ত্রী জাহানারা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন আমাদের চোখের সামনে বাড়িঘর, জমিজমা পদ্মা নদী নিয়ে গেল। আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না, নিঃস্ব হয়ে গেলাম।