কিছু দিন পর পর কোন না কোন এক অজুহাতে ফিলিস্তিনিতে হামলা করে বসে ইসরাইল। সম্প্রতি গাজাতে হামাস যোদ্ধাদের অস্ত্র মজুদের অভিযোগে সেখানকার এক পাঁচতলা বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয় ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এ হামলায় নিহত হয় দুবছরের কন্যা শিশুসহ তার অন্তঃসত্ত্বা মা।
আনন্দবাজারের বরাত দিয়ে জানা যায়, ইসরাইলের এমন প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযানের তকমা লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করার ঘটনায় প্রতিবাদ করতে শুরু করেছেন গাজাবাসী। তবে গুলি, বোমার প্রতিবাদে তারা কাস্তে, কামান তুলে নেননি। বরং প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে বেছে নিয়েছেন সংগীতকে। গান গেয়ে এ প্রতিবাদে শামিল হচ্ছেন শহরবাসী।
গাজা শহরের যে পাঁচতলা বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়, সেটা ছিল ফিলিস্তিনের সাইয়েদ আল-মিশাল সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। যা বছর খানেক ধরেই দেশটিতে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় যে কয়েকটি হাতেগোনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল, তার মধ্যে অন্যতম এ আল-মিশাল। পাঁচতলা বাড়িটিতে ছিল প্রেক্ষাগৃহ, নাটকের মঞ্চ এবং একটি গ্রন্থাগার।প্রতি বছর বিভিন্ন সংগীত অনুষ্ঠানের আয়োজনের পাশাপাশি এ কেন্দ্রটি ছিল বিভিন্ন শিল্প ও সংস্কৃতিমনা নতুন প্রজন্মের সংযোগের ক্ষেত্রস্থল। তাই অনেকেই মনে করছেন ইসরাইল কোন এক বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটির ভবনকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
থিয়েটারকর্মী হানিন আল-হোলি বলেন, আল-মিশাল কেন্দ্র ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য খুবই জরুরি ছিল। তাই ইচ্ছে করেই হামাসের অজুহাত দিয়ে এই ভবনটিকে গুঁড়িয়ে দেয় ইসরাইল।
ইসরাইল-ফিলিস্তিনি সংঘর্ষ বেশ কয়েক বছর ধরেই বিদ্যমান। তবে প্রত্যেকবারের মতো প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে অস্ত্র বা টায়ার না জ্বালিয়ে সপ্তাহে একদিন ধ্বংসস্তূপে জড়ো হয়ে আল-মিশাল এবং তার সঙ্গীরা গিটার কাধে নিয়ে গান করছে। কোনো দিন হচ্ছে একক সংগীতের অনুষ্ঠান। আবার কোনো দিন ব্যান্ডের গান। এমনকি ধ্বংসস্তূপের ওপরে তিন-চারটি পথনাটিকাও পরিবেশন করা হয়ে গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সংগীতশিল্পী আলা খুদেই বলেন, শিল্প প্রতিবাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। আর তা বুঝতে পেরেই মনে হয় ইসরাইল এখানে হামলা চালিয়েছিল। তবে আমরাও আমাদের প্রতিবাদ বন্ধ করবো না। মেশিনগানের জবাব দেব গান গেয়েই।