ভারতের সিনেমা পাড়া বলিউডে শুরু হওয়া মিটু আন্দোলনের ঢেউ দেশটির রাজনীতির ময়দানেও আঘাত হেনেছে। এরইমধ্যে দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলেছেন ছয়জন নারী সাংবাদিক। আর এ নিয়ে তোপের মুখে আছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। গুঞ্জন উঠেছে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হতে পারে আকবরকে।
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের দৈনিক আনন্দবাজার জানিয়েছে, আকবরকে সরিয়ে দিতে বিরোধীরা সরকারকে চাপ দিচ্ছে। তবে আফ্রিকা সফর থাকা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না সরকার। বরং সফর দেশে তিনি দেশে ফিরলে মন্ত্রীর কাছে ওই নারীদের অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য চাওয়া হবে। সেক্ষেত্রে মন্ত্রীকে নিজে থেকেই সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।এদিকে আকবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর সরকারের চার শীর্ষ মন্ত্রী- অরুণ জেটলি, রাজনাথ সিং, নিতিন গডকড়ী এবং সুষমা স্বরাজ তাকে সরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সূত্র জানিয়েছে, আকবরকে বরখাস্ত করা হবে না। বরং সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, তিনি নিজে থেকেই সরে গেলে সেটা ভালো হবে।
বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে মুখ খুলেছেন। মন্ত্রীর নাম উল্লেখ না করে স্মৃতি বলেন, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি নিজেই যেন বিবৃতি দেন। তবে কর্মক্ষেত্রে নিজেদের যৌন হেনস্থার কথা নারীরা প্রকাশ করা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। কোনোভাবে যেন এটি বন্ধ না করা হয়।
স্মৃতির এই মন্তব্যের পর অনেকটা স্পষ্ট যে, আকবরকে সরিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে শুধু সরকারের ভেতর থেকেই নয় চাপ আসছে বাইরে থেকেও। জানা গেছে, আরএসএসও এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কংগ্রেস আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানালেও সেদিক থেকেও যে ঢেউ আসছে তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।
আগামী বছর ভারতে লোকসভা নির্বাচন। তাই সরকারের ভেতর ও বাইরে আকবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় আপাতত তাকে সরিয়ে দিতে পারলেই যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন মোদি। সরকার মনে করছে আকবর নিজে থেকে সরে গেলে অভিযোগের তীরটা অন্তত তাদের দিক থেকে সরে যাবে। যদিও দলের একটি অংশ মনে করছে, এতে করে বিরোধীরা সমালোচনার একটি ইস্যু পেয়ে যাবে। তখন তারা অন্যান্য মন্ত্রীদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ তুলতে পারে বলে ওই অংশের মত।