শীর্ষ নিউজ, ঢাকা: নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার যে ছুটি নিয়েছেন তা ‘রহস্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
আজ রোববার সকালে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সাহেবকে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা যেভাবে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছেন তা সন্ত্রাসী আচরণ এবং তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কেন ছুটি নিয়েছেন নাকি নিতে বাধ্য করা হয়েছে তাও রহস্যজনক। ইসিকে সর্বোচ্চ চাপে রেখে কাজ করাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কতিপয় কমিশনার ও কর্মকর্তারা নিজেরা যে আচরণবিধি তৈরি করছেন তা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিপন্থি। কারণ এই কমিশনের কয়েকজন আধিকারিক কমিশনের ক্ষমতা কমিয়ে সরকারকে দিতে চান। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করার নজীর পৃথিবীর কোথাও নেই। অথচ প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের সময় সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করতে আইন করতে চাচ্ছেন।
রিজভী বলেন, আসন্ন নির্বাচন নিয়ে চারদিকে নৈরাশ্যের ছবি। সরকার পুনরায় একতরফা নির্বাচন করার জন্য এখন এজিদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি হচ্ছে।
ইইউ ইসিকে পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছে তারা আগামী সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। অন্যান্য দাতা ও সাহায্য সংস্থা, বিদেশী মিশন থেকেও নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকারি ইচ্ছাধীন চিকিৎসায় দেশনেত্রী যে সুচিকিৎসা পাবেন না সেই আশঙ্কাটি আমরা পূর্বেই করেছিলাম। এ বিষয়ে বারবার আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে অবহিত করা হয়েছে। সর্বাধিক জনপ্রিয় বিএনপি চেয়ারপারসনকে বন্দী করে রাখা হয়েছে তো কষ্ট দেয়ার জন্য। সেখানে উন্নতমানের চিকিৎসার প্রশ্নই আসেনা। বিএসএমএম ইউতে শুধুমাত্র যে ফিজিও থেরাপী দেয়া হয় সেটিও পর্যাপ্ত নয়। তাঁর ব্যক্তিগত বিশেজ্ঞ ডাক্তারদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি স্বাস্থ্য পরিক্ষার জন্য। অথচ এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ছিল।
রিজভী বলেন, আমি আবারও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর পছন্দমত চিকিৎসক এবং হাসপাতালের ব্যবস্থা করার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বে আইনীভাবে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৯ অক্টোবর। আমরা আগেই বলেছি বিবাদীর অনুপস্থিতিতে মামলার রায় নির্ধারণ পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। সরকার প্রধানের নির্দেশেই সম্পূর্ণ প্রতিহিংসামূলকভাবে এ রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে। সেজন্যই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আদালতের ওপর চাপসৃষ্টি করে রায়ের দিন ধার্য করে নিয়েছে। আরেকটি ফরমায়েশি রায় হতে যাচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য দেশবাসী প্রহর গুনছে। এ আদালতে ন্যায় বিচার পাওয়া যাবে কিনা সেই প্রশ্নও মানুষের মনে জেগে উঠছে।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্ব নির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন প্রমুখ।