ইনজুরির কারণে এশিয়া কাপেই দল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন সাকিব আল হাসান। ইনজুরি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে জানান সু-সংবাদ। কিন্তু প্রশ্ন ছিল কবে মাঠে ফিরবেন তিনি? শুরুতে শোনা গিয়েছিল তিন মাসের আগে তার মাঠে ফেরা সম্ভব নয়। তবে হঠাৎ করেই সাকিব জানুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি লীগ খেলার অনুমোদন চান বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে। প্রথমে আপত্তি করলেও গতকাল তাকে অনুমোদন দেয় বিসিবি। তবে সেখানেও রাখা হয়েছে শর্ত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা সাকিবকে আফগানিস্তানে খেলার অনুমতি দিয়েছি।‘হ্যাঁ, আমরা সাকিবকে আফগানিস্তানে খেলার অনুমতি দিয়েছি।
তবে তাকে শর্তও দেয়া হয়েছে সে যদি পুরোপুরি ফিট থাকে তবেই খেলতে যেতে পারবেন। এই জন্য লাগবে ফিজিও রিপোর্টও।’ দেশে সাকিব খেলতে পারছে না জিম্বাবুয়ে সিরিজে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও খেলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে আছে সন্দেহ। বিশ্বকাপের জন্য তাকে ফিট থাকতে হলে নেয়া যাবে না কোনো ঝুঁকি। এরপরও তাকে শর্ত দিয়ে বিদেশ লীগে খেলার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে সাকিবকে অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিসিবি সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজনও। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, তাকে (সাকিব) অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবে শর্তের কথা আছে সেখানে। যদি সাকিব ফিট থাকেন তবেই খেলতে যেতে পারবেন আরব আমিরাতে। সাকিব আল হাসান ইনজুরিতে পড়েন এ বছরের শুরুতে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে। ফিল্ডিং করার সময় তার আঙুল কেটে যায়। সেখানে লাগে ১০টি সেলাই। এরপর সাকিব বেশ কিছু দিন খেলতে পারেননি দেশের হয়ে। তবে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে মাঠে নামেন মার্চে। এরপরই চলে যান এইপিএলে খেলতে। সেখান থেকে খেলে এসে যোগ দেন ভারতে দলের সঙ্গে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। এরপর চলে যান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে, টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে। তার ইনজুরি ফের দেখা দেয় ক্যারিবীয়ানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সময়। ইনজেকশন নিয়েই তিনি মাঠে নেমেছিলেন। সেই সময় চিকিৎসকরা জানান তার আঙুলে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। সাকিবও দেশে ফিরে জানান তিনি দ্রুতই অপারেশন করিয়ে নিতে চান। কিন্তু সামনেই এশিয়া কাপ। তাই বিসিবি সভাপতি অনুরোধ করেন সাকিবকে এশিয়া কাপে খেলেই অপারেশন করাতে। সাকিব তাতে রাজি হন।
কিন্তু বিধিবাম। সাকিব এশিয়া কাপে খেলতে যাওয়ার আগেই জানান তার যে অবস্থা তাতে তিনি ২০ থেকে ৩০ ভাগ পারফরম্যান্স করতে পারবেন। হয়েছেও তাই, ইনজুরির কারণে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। গুরুত্বপূূর্ণ শেষ দুই ম্যাচে তো তিনি মাঠে নামতে পারেননি। জানা যায়, তার আঙুলে ইনজুরি আক্রান্ত জায়গাতে ইনফেকশন হয়েছে। দেশে ফিরে আসলে তার আঙুল থেকে বের করা হয় দূষিত রক্ত। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য যান অস্ট্রেলিয়া। তবে যাওয়ার আগে সাকিব নিজেকে নিয়ে দেন ভয়াবহ তথ্য। তিনি জানান তার আঙুল আর আগের অবস্থাতে ফিরবে না। এ নিয়েও নড়েচড়ে বসে বিসিবি। সব দায় গিয়ে পড়ে সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কাঁধে। এ নিয়ে চলতে থাকে বিস্তর বিতর্ক। সভাপতি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন সাকিবের ওপর কোনো জোর করা হয়নি তিনি নিজের ইচ্ছাতেই এশিয়া কাপে খেলতে গেছেন। সেই সঙ্গে সাকিবের আঙুলের এমন অবস্থার জন্য বিসিবি শোকজ করেন দলের ফিজিও থিহান চন্দ্রমোহনকে।
সাকিব অবশ্য জানিয়েছেন তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে খেলতে চান নিজেকে যাচাই করে নিতে কতটা ফিট আছেন। তাই প্রশ্ন উঠেছে তাহলে দেশের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলবেন কিনা! অবশ্য আকরাম খান আশা প্রকাশ করেছে তারা ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সিরিজে থাকবেন তবে সেটি শেষ দিকে।