সাকিবহীন দলে আলোকিত তাইজুল

সাকিব আল হাসান দলে থাকলে বাড়তি বাঁহাতি স্পেশালিস্ট স্পিনারের প্রয়োজন হয় না। তাই দলে বাঁহাতি স্পিনারদের জায়গা করে নেয়াটা ভীষণ চ্যালেঞ্জের। যেমনটি তাইজুল ইসলাম প্রতিনিয়ত মুখোমুখি হচ্ছেন। ২০১৪তে অভিষেক হলেও এখন পর্যন্ত খেলতে পেরেছেন মাত্র ২১ টেস্টে। ওয়ানডে খেলেছেন মাত্র ৪ ম্যাচ। আর টি-টোয়েন্টিতে সুযোগই হয়নি খেলার। তবে, যেখানে সুযোগ পেয়েছেন রেখেছেন সামর্থ্যের স্বাক্ষর। এরই মধ্যে টেস্টে তার উউকেট সংখ্যা ৮৫টি।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের তিন ইনিংসে নিয়েছেন ১৬ উইকেট। সিলেট টেস্টের দুই ইনিংসে ১১ উইকেট পেয়েছেন। আর গতকাল ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসেও নিয়েছেন ৫ উইকেট। টানা তিন ইনিংসে ৫টি করে উইকেট নিয়ে গড়েছেন রেকর্ডও। এরই মধ্যে তিনি দেশের হয়ে টেস্টে বল হাতে জায়গা করে নিয়েছেন শীর্ষ তিনে। এক টেস্টেই তিনি পেছনে ফেলেছেন শাহাদাত হোসেন রাজীর ও মাশরফি বিন মুর্তজাকে। এখন তার সামনে ১০০ উইকেট নেয়া মোহাম্মদ রফিক। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাকিব আল হাসান না থাকায় তার জন্য সুযোগ ছিল নিজেকে মেলে ধরার। সেটি দারুণভাবে করতে পেরেছেন তিনি। গতকাল দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাইজুল বলেন, ‘বাড়তি তৃপ্তি না, আমি অনেক বেশি বোলিং করার সুযোগ পাচ্ছি। সাকিব ভাই থাকলে হয়তো আমার ওপর এত দায়িত্ব পড়ত না। আমি উপভোগ করছি।’
আসলেই যে সাকিবের অনুপস্থিতিটা ভালোভাবেই উপভোগ করছেন তাইজুল। বল হাতে টানা তিন ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে ভাগ বসিয়েছেন সাকিব ও এনামুল হক জুনিয়রের কীর্তিতে। বাংলাদেশের হয়ে টানা তিন ইনিংসে ৫ উইকেট পাওয়া তিন বোলারই হলো বাঁহাতি স্পিনার। এই নিয়ে তাইজুল বলেন, ‘আসলে উইকেটের অবস্থাটা এমন, যদি আমরা ডিসিপ্লিন বল করতে পারি তাহলে অসম্ভব কিছুই না। আমি আশাবাদী সামনে আরো উইকেট নিতে পারবো।’
চাকাভাকে শর্টলেগে মুমিনুলের ক্যাচ বানিয়ে পাঁচের স্বাদ পেলেন তাইজুল। সবমিলিয়ে টেস্টে ষষ্ঠবারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিলেন ২৬ বছর বয়সী এ স্পিনার। ক্যারিয়ার সেরা ৩৯ রানে ৮ উইকেট এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই। আর এক টেস্টে একবারই পেয়েছেন ১০ উইকেটের দেখা। সিরিজের প্রথম টেস্টে সিলেটে দুই ইনিংস মিলিয়ে নেন ১১ উইকেট। তার সামনে এখন সুযোগ এক সিরিজে এনামুল হক জুনিয়র ১৮ ও মেহেদী হাসান মিরাজের নেয়া ১৯ উইকেটের মাইলফলক ছাড়িয়ে যাওয়ার। গতকালই তিনি এক সিরিজে সাকিবের ১৬ উইকেট নেয়ার রেকর্ড স্পর্শ করেছেন। নিজের পারফরমেন্স নিয়ে তাইজুল বলেন, ‘ভালো পারফরমেন্স করলে প্রতিটা ক্রিকেটারের ভালো লাগে। তবে, দলটা আগে। দলটা এখন ভালো অবস্থানে আছে।’
বাংলাদেশ দল প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেটে ৫২২ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছিল। জিম্বাবুয়ে এই রান টপকানোতো দূরে থাক উল্টো পড়েছে ফলো অনে। জিম্বাবুয়ে গতকাল যখন ৩২৩ রানের ফলো অন এড়াতে অনেকটাই কাছে। ঠিক তখন তাইজুলের আঘাতে ১৯ রান দূরেই থামতে বাধ্য হন। তৃতীয় দিন শেষে দলের অবস্থান নিয়ে তাইজুল বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় আমরা ভালো অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছি। আমরা যাই করি না কেন (ফলো অন) ভালো করলে ফলাফল ইতিবাচক হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *