আর্জেন্টিনার ফুটবলে কলঙ্কের কালো তিলকটা নতুন করে পড়েছে গত শনিবার রাতেই। কোপা লিবার্তোদোরেসের ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের আগে প্রতিপক্ষ বোকা জুনিয়র্সের খেলোয়াড় বহনকারী গাড়িতে হামলা চালায় রিভারপ্লেট সমর্থকেরা। ভয়ঙ্কর সেই হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় বোকা জুনিয়র্সের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে। সেই হামলার জের ধরে আর্জেন্টিনার আগুনে লড়াইটা নেয়া হলো আর্জেন্টিনার বাইরে। দুই ক্লাবের সঙ্গে বৈঠকের পরই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল। ম্যাচটি আর্জেন্টিনার বাইরে কোথায় হবে, সেটি এখনো নিশ্চিত হয়নি। তবে কনমেবল আভাস দিয়েছে, ম্যাচটির সম্ভাব্য ভেন্যু হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি। দিন-তারিখও চূড়ান্ত করা হয়নি।তবে সম্ভাব্য তারিখ ৮ কিংবা ৯ ডিসেম্বর। এই প্রথম বারের মতো মহাদেশীয় এই শ্রেষ্ঠত্বের ফাইনালে মুখোমুখি আর্জেন্টিনার দুই ক্লাব। টুর্নামেন্টের ইতিহাসেও ফাইনালে একই শহরের দুটি ক্লাবের মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম। সূচী অনুযায়ী গত ১১ নভেম্বর প্রথম লেগটি বোকা জুনিয়র্সের মাঠে হয়েছে। বৃষ্টিবিঘিœত সেই ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়। গত শনিবার বোকা জুনিয়র্সের খেলোয়াড়দের বহনকারী গাড়িটি স্টেডিয়াম চত্বরে পৌঁছা মাত্রই হামলা চালায় রিভারপ্লেট সমর্থকরা। ইট, পাথর ছুড়ে মারে। হামলায় গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়। সেই ভাঙা গ্লাসের কাচ গিয়ে ঢুকে খেলোয়াড়দের চোখে-মুখে। পাশাপাশি বোকা খেলোয়াড়দের লক্ষ্য করে মরিচের গুড়াও স্প্রে করে রিভারপ্লেটের সমর্থকেরা। আহত হন বোকা জুনিয়র্সের অধিনায়কসহ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কয়েকজনকে। কোপা লিবার্তোদোরেসে এই দুই দল সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল ২০১৫ সালে। সেবারও হামলায় পন্ড হয়েছিল ম্যাচ। তবে সেবার প্রতিপক্ষের উপর হামলাটা চালিয়েছিল বোকা জুনিয়র্সের সমর্থকেরা। ধারণা করা হচ্ছে, সেই হামলার বদলা নিতেই এই হামলা চালিয়েছে রিভারপ্লেট সমর্থকেরা। যদিও বুয়েনস এইরেসের মেয়র রদ্রিগেজ লারেতা অন্য দাবি করেছেন। বলেছেন, ম্যাচটির অন্তত ৩০০টি টিকিট চড়া দামে কালো বাজারে বিক্রির পরিকল্পনা এঁটেছিল রিভারেেপ্লটের সমর্থক গোষ্ঠি। কিন্তু পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে টিকিট গুলো বাজেয়াপ্ত করে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত লিভারপ্লেটের উগ্র সমর্থক গোষ্ঠির এক নেতাকে গ্রেফতার করে। তারই প্রতিবাদে নাকি রিভারপ্লেটের সমর্থকরা ন্যাক্কারজনক এই হামলা চালিয়েছে। শনিবার ওই হামলার পর ম্যাচটি পন্ড হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ ম্যাচটি আয়োজন করতে চেয়েছিল পরের দিন। দফায় দফায় বৈঠক করে বোকা জুনিয়র্সকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে ম্যাচটি খেলার জন্য। কিন্তু বোকা জুনিয়র্স কিছুতেই রাজি হয়নি। তারা বরং কনমেবলের কাছে অনুরোধ করে ম্যাচটি রিভারপ্লেটের মাঠ থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে নেয়ার। বোকার সেই অনুরোধেই ম্যাচটি একেবারে আর্জেন্টিনার বাইরে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কনমেবল।