ফেনীতে একটি আবাসিক মাদ্রাসা থেকে জহিরুল ইসলাম সাকিব (১৪) নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত সাকিব শহরের পূর্ব উকিল পাড়ার কুয়েত প্রবাসী আবদুল আউয়াল কালামিয়ার ছেলে। এঘটনায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হালিমা-সাদিয়া (রা.) মহিলা মাদ্রাসার তিন শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের চাচা আবুল কালাম আজাদ জানান, ফেনী সদর উপজেলার লালপোল এলাকার হালিমা-সাদিয়া (রা.) মহিলা মাদ্রাসায় চলতি বছর জানুয়ারি মাসে ভর্তি হয় জহিরুল ইসলাম সাকিব। মাদ্রাসাটি মহিলা মাদ্রাসা হলেও মহিলাদের পাশাপাশি চলতি বছর থেকে ছেলেদের শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। আবাসিক মাদ্রাসার কুদরী জামাত (৭ম শ্রেণি) বিভাগের ছাত্র সাকিব বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাদ্রাসার একটি কক্ষের দরজা বন্ধ করে জানালার গ্রিলের সাথে গামছা পেচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে পরিবারের কাছে খবর দেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে তারা মাদ্রাসায় ছুটে গেলেও সাকিবের লাশ মাদ্রাসায় পায়নি।
তিনি আরও জানান, সাকিবকে মাদ্রাসায় ভর্তি করার পর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ নানা ভাবে নিয়মিত নির্যাতন করতো।তাদের নির্যাতনের এক পর্যায়ে সাকিব মারা গেলে তারা আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পরিবারের কাছে জানিয়েছে।
ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, মাদ্রাসা শিক্ষকের ভাষ্যমতে ফাঁস লাগালো অবস্থায় উদ্ধার সাকিবকে রাতে স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে সাকিবের মরদেহ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লাশ মর্গে প্রেরণ করে। সাকিবের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রেখে তিন শিক্ষক চলে যাওয়ার সময় হাসপাতালের কর্তব্যরত পুলিশ তাদের আটক করে ফেনী মডেল থানায় খবর দেয়। জিঙ্গাসাবাদের জন্য আটক শিক্ষক আবদুল করিম, মোরশেদ আলম ও মোস্তাফিজুর রহমান পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
তিনি আরো জানান, পুলিশ মধ্যরাতে মাদ্রাসায় অভিযান চালালেও আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় প্রধান হুজুরকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। নিহত সাকিবের লাশ শুক্রবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।