আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে এসেছেন। স্বল্প আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না এলে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা বন্ধ হয়ে যাবে। দেশ আবারও অন্ধকারে চলে যাবে। শেখ হাসিনা নির্বাচনী ইশতেয়ারে দেশের প্রত্যেক গ্রামকে শহরে পরিণত ও প্রত্যেক পরিবারের একজন বেকার যুবককে চাকরি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। শেখ হাসিনা কখনও ওয়াদা ভঙ্গ করেন না।আজ শুক্রবার সকালে ও বিকালে ওবায়দুল কাদের তার নির্বাচনী এলাকা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কে.টি.এম হাট, দাসের হাট ও চৌধুরীহাট এবং বিকালে কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ও বালুয়াদীঘিসহ বেশ কয়েকটি স্থানে গণসংযোগকালে পথসভায় এসব কথা বলেন।
নির্বাচনে বিএনপি নিশ্চিত পরাজয় জেনে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা আছে কুটনীতিকদের সঙ্গে, তারা আছে মিডিয়ার সঙ্গে, তারা মাঠে নেই। তারা জানে নিশ্চিতভাবে তারা নির্বাচনে পরাজিত হবে। সে কারণে ভিত্তিহীন মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। অলিক এমন কিছু কথা বলছে যার সঙ্গে বাস্তবের কোন সম্পর্ক নেই। যতই দিন যাচ্ছে বিএনপি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। ভোটের বাজারে তাদের ভাঙ্গা হাট জমছে না। তারা আজকে এসব অবান্তর অভিযোগ তুলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর অজুহাত খুঁজছে। এখন তাদের কাজই হচ্ছে কূটনীতিকদের সঙ্গে বসা, মিডিয়ার সঙ্গে বসা।’
নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে কাদের বলেন, ‘আমি গত ১২ বছর এ এলাকায় রাস্তাঘাট পাকা করেছি, ব্রিজ-কালভার্ট, স্কুল, কলেজের ভবন নির্মাণ করেছি, বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছি। নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে এলাকাকে রক্ষা করতে ক্লোজার নির্মান করেছি। গত নির্বাচনে আপনাদের দুটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। একটি বিদ্যুৎ সংযোগ, অন্যটি রাস্তা পাকা করণ। এ দুটি কাজ শতভাগ করে দিয়েছি। এত উন্নয়ন অন্য কোন সরকারের আমলে হয়নি। আমি আজও দুটি প্রতিশ্রুতি. দিচ্ছি প্রত্যেক ঘরের ১জন বেকার যুবককে চাকরি এবং প্রতি ঘরে গ্যাস সংযোগ দেবো। আমি যা বলি তা করি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজনীতি করি না। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যহত রাথতে আমাকে আবারো নির্বাচিত করতে নৌকায় ভোট দিন। এটি আমার দাবি, এটি আমার আমার অধিকার।’
নারীদের উদ্দেশ্যে করে তিনি আরো বলেন, ‘আগে সন্তানের জন্ম নিবন্ধনে বাপের নাম থাকতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাপের নামের সঙ্গে মায়ের নাম সংযুক্ত করে আপনাদের সম্মানিত করেছেন। আপনারা ঘরে বসে হিন্দি সিরিয়াল, নাটক, ছবি দেখছেন, আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্য প্রাচ্যে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ঘরে বসে কথা বলতে পারছেন। এগুলো শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলে সম্ভব হয়েছে। ছেলে-মেয়েদের উপবৃত্তির টাকা মায়েদের হাতে মোবাইলের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায় এলে আপনাদের আরো সম্মানিত করবেন।’ আগামী ৩০ ডিসেম্বর নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানিত ও জয়যুক্ত করতে নারীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের ইঙ্গিত করে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের উদ্যেশে বলেন, ‘তিনি ২২ বছর এ এলাকায় ক্ষমতায় ছিলেন, জনগণের জন্য কোন কাজ করেননি। জনগণকে কলা দেখিয়েছেন, মূলা ঝুলিয়েছেন, বাঙ্গালিকে হাইকোর্ট দেখিয়েছেন। তার বেলা শেষ হয়ে গেছে। তিনি ওয়াদা দিয়ে কথা রাখেন না, তিনি ভূয়া। গণসংযোগে রাস্তায় নামলে তার ডাকে জনগণ সাড়া দেয় নাা। মওদুদ আহমদের ক্ষমতার আমলে আমার বৃদ্ধ মা ভোট কেন্দ্র গিয়ে ভোট দিতে পারেনি।আমার স্ত্রীকে ভোট কেন্দ্র থেকে অপমানিত করে তার সন্ত্রাসী বাহিনী বের করে দিয়েছিল। আমি প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না। ভোট নেওয়ার জন্য সন্ত্রাসী আনার ষড়যন্ত্র করলেও তা সফল হতে দেওয়া হবে না।’গণসংযোগ ও পথসভায় উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ শাহাব উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন রুমি, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জহিরুল হক রায়হান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ইস্কান্দার মির্জা শামীম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নুরুল করিম জুয়েল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাজমুল হক নাজিম, ব্যবসায়ী লোকনাথ ভৌমিক ও সাহিত্যিক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।