ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ল রিয়াল মাদ্রিদ। শনিবার রাতে ফাইনালে আল আইনকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে প্রথম দল হিসেবে এই টুনাের্মন্টে হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের কীতির্ গড়েছে লস-বøাঙ্কোসরা। শুধু কি তাই? চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী বাসেের্লানাকে ছাড়িয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে সবোর্চ্চ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকডির্টও নিজেদের করে নিয়েছে দলটি। ২০০০ সাল থেকে আয়োজিত ক্লাব বিশ্বকাপে এখন পযর্ন্ত তিনটি ট্রফি জিতেছে বাসার্। আল আইনকে উড়িয়ে রিয়াল নিল চতুথর্ শিরোপার স্বাদ। এর আগে ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে শিরোপা জিতেছিল তারা।
আরব আমিরাতের ক্লাব আল আইনের বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবেই জিতেছে সান্তিয়াগো সোলারির রিয়াল। যদিও ম্যাচের আগে আল আইনের কোচ বলেছিলেন, ‘কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।’ কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে মাসিির্ডস আর স্মাটর্ কারের মধ্যকার পাথর্ক্যটা বুঝিয়ে দিয়েছে রিয়াল। সেমিফাইনালে আজেির্ন্টনার ক্লাব রিভার প্লেটকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল আল আইন। আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে রিয়ালের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচে সেই দলটি মাথা তুলেই দঁাড়াতে পারেনি।
সান্তিয়াগো সোলারির ৪-৩-৩ কৌশলে ম্যাচের শুরু থেকেই বেশ গোছালো ফুটবলশৈলী প্রদশর্ন করেছে রিয়াল। ম্যাচে এগিয়ে যেতেও বেশি সময় নেয়নি তারা। ১৪তম মিনিটে করিম বেনজেমার কাটব্যাক থেকে পাওয়া বল গতিময় শটে আল আইনের জালে জড়ান এবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী লুকা মদ্রিচ। রিয়ালের হয়ে কোনো ফাইনালে ওটাই ক্রোয়াট মিডফিল্ডারের প্রথম গোল। এর মিনিট দুয়েক আগে অবশ্য স্প্যানিশ জায়ান্টদের গোল হজমের হাত থেকে রক্ষা করেন সাজির্ও রামোস। দলের ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মাসেের্লার চরম ভুলের খেসারত দিতে যাচ্ছিল রিয়াল।
সেমিফাইনালে হ্যাটট্রিক করা গ্যারেথ বেল ২১ মিনিটে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। প্রথমাধের্র এমন সুযোগ রিয়াল তৈরি করেছে আরও। তবে নিজেদের রক্ষণ জমাট রেখে রিয়ালকে ওই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে দেয়নি আল আইনের ডিফেন্ডাররা। কিন্তু দ্বিতীয়াধের্ আর পেরে উঠেনি তারা। বিরতির পরই বিধ্বংসী চেহারায় হাজির হয় রিয়াল। ৬০তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ান মাকোর্স লিওরেন্তে। টনি ক্রুসের নেয়া কনার্র শট ক্লিয়ার করেন প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়েরা। ডি বক্সের বাইরে বল পেয়ে জালে জড়াতে ভুল করেননি লিওরেন্তে।
৭৮তম মিনিটে রামোসের গোলে জয় একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় রিয়ালের (৩-০)। ৮৬তম মিনিটে সান্ত¡না পুরস্কার হিসেবে একটি গোল পায় আরব আমিরাতের চ্যাম্পিয়ন আল আইন। গোলটি করেন সুকাসা শিওতানি। তবে জাপানি ডিফেন্ডার গোলে ব্যবধান কমালেও (৩-১) ইনজুরি সময়ে ইয়াহিয়া নাদেরের আত্মঘাতী গোলে স্কোরলাইন ৪-১ বানিয়ে জয়ের আনন্দ করতে করতে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। এই জয়ে তারা এখন শুধু ইউরোপ সেরাই নয়, বিশ্বসেরাও।
টানা তিনবারের ইউরোপ সেরা রিয়াল, টানা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বসেরা ক্লাবের খেতাবটাও জিতল। এমন অনন্য নজির গড়ার পেছনে আছে সাবেক কোচ জিনেদিন জিদানের ভূমিকা। শনিবার আল আইনকে হারিয়ে শিরোপা জেতার পর তাই পূবর্সূরি জিদানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বতর্মান কোচ সোলারি। এই আজের্ন্টাইন মনে করছেন, ভবিষ্যতে যেকোনো দলের জন্য এমন কীতির্র পুনরাবৃত্তি ঘটানো কঠিন হবে, ‘ভবিষ্যতে এমনটি করা দুরূহ হবে।’
হুলেন লোপেতেগির বিদায়ের পর রিয়ালের দায়িত্ব নিয়ে রিয়ালের হয়ে প্রথম শিরোপার স্বাদ পেলেন সোলারি। তাতে ভীষণ খুশি তিনি। এই আজের্ন্টাইন জানেন, কাজটা দুরূহ হবে। এরপরও ভবিষ্যতে সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান সোলারি, ‘আমরা সবাই আনন্দিত। ভবিষ্যতে আমাদের মতো এমন কীতির্র পুনরাবৃত্তি কঠিন হবে। তবে আমরা এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। ছেলেরা ইতিহাসই গড়েছে। এই দল সফলতার পুনরাবৃত্তি চায়, ক্লাবটিও।’