বাদ পড়লেন হেভিওয়েটরা

মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি অনেক হেভিওয়েট নেতার। সর্বশেষ মন্ত্রিসভায় ছিলেন এমন অনেক নেতা বাদ পড়েছেন। সব মিলিয়ে আগের মন্ত্রিসভার ৩৬ জন সদস্য এবার জায়গা পাননি। এর মধ্যে ২৫ মন্ত্রী, ৯ প্রতিমন্ত্রী ও ২ উপমন্ত্রী রয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিশাল বিজয়ের পর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়ে ছিলেন নতুন মন্ত্রিসভায় বড় চমক থাকবে। গতকাল প্রকাশ হওয়া মন্ত্রীদের তালিকায় অনেকটা সেই চমকই দেখা গেল। অনেকে বলছেন নতুন মন্ত্রিসভায় দলের গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতাকে রাখা হয়নি।

দল এবং সরকারকে আলাদা করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন নেতারা। এক দল তরুণ নিয়ে নতুন মন্ত্রিসভাকে রাজনীতির ময়দানে বড় চমক এবং পরিবর্তন হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ।আর এ কারণেই অনেকটা রেওয়াজ ভেঙে শপথের আগেই মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকা ঘোষণা করা হয় গতকাল।
আওয়ামী লীগের তিন প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছেন। আগের মন্ত্রিসভার জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গত ৩রা জানুয়ারি মারা যান।

বাদ পড়া মন্ত্রীদের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন অবসরে যাওয়ার কথা। নিজে মন্ত্রণালয়ে না থাকলেও ভাই ড. এ কে আবদুল মোমেন দায়িত্ব পেয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ নতুন মন্ত্রিসভায় নেই। বাদ পড়েছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম, সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পরিবেশ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, মৎস্যমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, বিমানমন্ত্রী এ. কে. এম শাহজাহান কামাল ও ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান। ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবারের নির্বাচনে মনোনয়নই পাননি। মন্ত্রীদের মধ্যে টেকনোক্রাট দুই মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি ও অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ভোটের আগেই পদত্যাগ করেন। প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে বাদ পড়েছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক (চুন্নু), বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষাবিভাগের প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী। বাদ পড়েছেন দুই উপমন্ত্রীও। এরা হলেন- পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আরিফ খান জয়। আরিফ খান জয় নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। এদিকে নতুন মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির কেউ নেই। আগের মন্ত্রিসভায় দলটির তিনজন মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। মহাজোটের শরিক জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি (জেপির) কেউই মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। আগের মন্ত্রিসভায় জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন ও জেপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু মন্ত্রী ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *