রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) থেকে পালিয়ে গেছে ৫ নেপালি শিক্ষার্থী। রাবিতে তারা পড়ালেখা করবে না সেকথা নেপালি সহপাঠিকে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরি থেকে পালিয়ে দেশে চলে গেছে। এরই মধ্যে তারা নিজ দেশে চলে গেছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর আব্দুল কাইয়ুম ইন্টারন্যাশন্যাল ডরমেটরির ওয়ার্ডেন অধ্যাপক ড. আশাদুল ইসলাম।
পালিয়ে যাওয়া নেপালি ওই শিক্ষার্থীরা হলেন- ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী উজ্জ্বল মাহাতো (পাসপোর্ট নং-০৯৮৮১৯০১ ও ভিসা নং- এ ০৮৪৮৪২৮), সুজান পারাজুলি (পাসপোর্ট নং ১০৬৪৫০৫৩ ও ভিসা নং এ ০৮৪৮২৯৮), মিলন কুমার মোকতার (পাসপোর্ট নং-০৬৫৮২২৬৪ ও ভিসা নং-এ০৮৪৮২৯৬), বিনোদ লামিছানে (পাসপোর্ট নং-১০৬৪৫০২৯ ও ভিসা নং এ০৮৪৮৫০৯) এবং কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী লিলা জুং রায়া মাঝি (পাসপোর্ট নং-০৯৮৬৬৩৯৮ ও ভিসা নং-এ০৮৪৮৪৩১)।
তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন বলে জানা গেছে।
প্রক্টর বরাবর দেওয়া অভিযোগপত্র থেকে আরও জানা যায়, ‘পাঁচজন নেপালি শিক্ষার্থী কোনও অনুমতি ছাড়া শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুম ইন্টারন্যাশন্যাল ডরমেটরি ত্যাগ করেছে। বিভিন্ন রুম পর্যবেক্ষণের সময় বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার সময় তাদের পাশের রুমের একজন নেপালী ছাত্র আনন্দ কুমার সাহা আমাদের নিশ্চিত করে যে, তারা আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে না। তাই একেবারেই ডরমেটরি ত্যাগ করে দেশে ফেরত গেছে।’
ফার্মেসি বিভাগের প্রথম বর্ষের নেপালি শিক্ষার্থী আনন্দ কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘তারা এখানে পড়বে না বলে দেশে চলে গেছে। তবে এ বিষয়ে আমি আর বেশি কিছু বলতে পারব না। তাদের অন্য কোনও কারণও থাকতে পারে।’
এদিকে চলে যাওয়া ওই বিভাগগুলোর প্রধানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পালিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা অনিয়মিত ছিল।
জানতে চাইলে ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীরা প্রথম থেকেই অনিয়মিত ছিল। বর্তমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পড়ালেখার প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় চলে যেতে পারে।’
কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি ড. বিমল কুমার প্রামাণিকও শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে একই কথা বলেন।এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে না জানিয়ে ডরমেটরি ত্যাগ করার বিষয়টি আমাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। বিষয়টি একাডেমিক শাখা দেখাশোনা করে। এবিষয়ে দায়িত্বরত উপ-রেজিস্ট্রারকে জানানো হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি চিন্তা ভাবনা করে ব্যবস্থা নেবে।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক শাখার উপ-রেজিস্ট্রার এএইচএম আসলাম হোসেন বলেন, ‘ভর্তি বাতিল করে চলে গেছে বা এখানে পড়বে না, সে বিষয়ে এখনও আমাকে তারা লিখিত দেয়নি। এছাড়া বিভাগ থেকেও জানানো হয়নি তারা ক্লাস করছে না। লিখিত দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারব। তারা যদি আবার ফিরে আসে তাহলে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবে।’