বরিশালে খাদ্য বিভাগের গুদামে ভাঙচুর চালিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। রেশন দিতে গড়িমসি ও ওজনে রেশনের পরিমাণ কম দেয়া নিয়ে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেলেও তাদের দাবি প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তার উপর হামলা ও মারধর করেন খাদ্য বিভাগের কর্মচারীরা। এতে বেশ কয়েকজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী হাসপাতালেও ভর্তি রয়েছেন। সোমবার বিকাল ৪টার দিকে নগরীর বান্দ রোডস্থ খাদ্য বিভাগের গুদামে এই ঘটনা ঘটে। এসময় তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ম্যান রেজাউল করিমকে থানায় নিয়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মী জামাল হোসেন বলেন, সদর স্টেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ডিসেম্বর মাসের রেশনের চাল ও গম উত্তোলন করার জন্য খাদ্য অফিসে ৫ দিন যাবত তারা ঘোরাঘুরি করছেন। সদর উপজেলা খাদ্য অফিস থেকে নানান অজুহাত দেখিয়ে তাদেরকে ঘোরানো হচ্ছিল। গতকাল বিকাল ৪টার দিকে তিনিসহ কয়েকজন সহকর্মী আবারও উপজেলা খাদ্য অফিসে গেলে তাকে পরদিন আসতে বলেন।
এতে দমকল কর্মীরা ক্ষুব্দ হলে তাদের সঙ্গে খাদ্য দপ্তরের কর্মচারীদের বাকবিতান্ডা হয়। জামাল বলেন, এ খবর পেয়ে সদর ফায়ার স্টেশন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কক্ষে যান। ওই কর্মকর্তা তখন তার কক্ষে ছিলেন না।
ফায়ার স্টেশন কর্মকর্তা সেখানে যাওয়ার পর খাদ্য অফিসের কর্মচারীরা তার সঙ্গে দুরব্যবহার করে। এক পর্যায়ে একজন অফিস সহায়ক চেয়ার দিয়ে স্টেশন অফিসার মো. আলাউদ্দিনকে আঘাত করেছে। খাদ্য অফিসের আশপাশের ব্যবসায়ীরা জানান, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি গাড়িতে ভেপু বাজিয়ে ২০/৩০ জন সেখানে যায়। তারা খাদ্য অফিসের ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের কক্ষে গিয়ে দেখা গেছে, কক্ষের প্লাস্টিকের ভাঙ্গা চেয়ারগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তছনছ করা হয়েছে কাগজপত্র।
খাদ্য বিভাগের এলএইচডি’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, ফায়ার সার্ভিসের লোকজন রেশন নিতে আসে। তবে সেই সময় পর্যাপ্ত লোকজন না থাকায় তাদের অক্ষেপ করতে বলা হয়। কিন্তু তারা ধৈর্য্যহারা হয়ে ৩/৪টি গাড়ি নিয়ে এসে খাদ্য গোডাউনে ভাঙচুর চালায় এবং এখানকার উপ পরিদর্শক হুমায়ন কবির, নিরাপত্তা কর্মী রেজাউল করিমসহ বেশ কয়েকজনকে বেধরক মারধর করে।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল স্টেশনের স্টেশন অফিসার মো: আলাউদ্দিন জানান, আমরা ৫ দিন যাবৎ রেশন নিতে গুদামে আসছি। কিন্তু তারা নানাভাবে গড়িমসি করছে এবং রেশন নিতে টাকা দাবী করছেন। এছাড়া প্রতিমাসে রেশন ওজনে ১শ থেকে দেড়শ কেজি কম হয়। এই নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা আমার উপর প্রথমে হামলা চালায়। পরবর্তীতে আমার সঙ্গে থাকা কয়েকজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের উপর হামলাও চালায় তারা। এই নিয়ে ঝামেলা হয়েছে তাদের সাথে। এই ঘটনায় আহত হয়ে আমরা বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি।
এই বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) আসাদুজ্জামান জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়। এছাড়া এই ঘটনায় কোনো পক্ষ থেকেই অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।