কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত বছর বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলা বিমানের পাইলটদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেপালি তদন্তকারীরা। রোববার নেপালের পর্যটনমন্ত্রী রবীন্দ্র অধিকারীর কাছে ৪৩ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে এই প্রশ্ন উত্থাপন করেন তারা। খবর কাঠমান্ডু পোস্টের।
ওই প্রতিবেদনে বেশ কিছু সুপারিশও করেন নেপালি তদন্তকারী দল। সেখানে বলা হয়, স্বাস্থ্যগত কারণে কোনও পাইলটের বিমান ওড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলে তার লাইসেন্স পুনঃনবায়নের আগে তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার দিকে জোরারোপ করা উচিত।
গত বছরের ১২ মার্চ প্লেনটি বিধ্বস্ত হলে ৫১ আরোহী নিহত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন একটা ব্যবস্থা চালু করতে হবে যাতে কোনও পাইলটের মেডিকেল কন্ডিশন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়। তদন্ত কমিশনের ওই প্রতিবেদনে ট্রেনিংয়ের অংশ হিসেবে বা বৈমানিকের পেশায় প্রবেশের আগে সব এয়ারলাইনের পাইলটদের মানসিক অবস্থা পর্যালোচনার কথা বলা হয়েছে।
তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর আগে কাঠমান্ডু পোস্ট এক বিস্তারিত প্রতিবেদনে জানিয়েছিল যে ফার্স্ট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানকে বিষণ্নতার কারণে ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। প্রতিবেদনে নেপালি তদন্তকারীরা লিখেছেন যে, তার পূর্ববর্তী আচরণকে সতর্ক সঙ্কেত হিসেবে আমলে নেয়া উচিত।
ওই প্রতিবেদন আরও বলা হয়, ফার্স্ট পাইলট আবিদ সুলতান ও সেকেন্ড পাইলট পৃথুলা রশীদ উদ্বিগ্নভাবে রানওয়ে খোঁজার চেষ্টা করছিলেন। সেখানে বলা হয়, উভয় পাইলট নিজেদের মধ্যে যে কথোপকথন চালিয়েছেন তাতে মনে হয়েছে তারা রানওয়ের অবস্থান নিয়ে অনিশ্চিত ছিলেন।
এদিকে বিমানের ককপিটের ভেতর পাইলট আবিদ সুলতান ক্রমাগত ধূমপান করছিলেন বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুর এক ঘণ্টার ফ্লাইটে আবিদ সুলতান ক্রমাগত ধূমপান করছিলেন।
এয়ারলাইন অপারেটরদের ‘নো স্মোকিং বা ধূমপান নিষিদ্ধ’ নীতি কড়াকড়িভাবে চালু করার কথাও সুপারিশ করা হয় ওই প্রতিবেদনে। অন্যদিকে নেপালি তদন্তকারীদের এমন প্রতিবেদনের জবাবে আজ সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।