এটি একটি লাভ স্টোরি বা সত্যি প্রেমের কাহিনী। চীনের পূর্বাঞ্চলের জাং জিয়াফেং এক বছর ধরে প্রেম করছিলেন ঝাং সিয়াওয়ুর সঙ্গে। এরই এক পর্যায়ে তার সেই প্রেমিকার ব্রেনে একটি সার্জারি হলো। এতে অচেতন হয়ে হাসপাতালের বিছানায় দীর্ঘদিন পড়ে রইলেন ঝাং সিয়াওয়ু। এ সময় ঝাং সিয়াওয়ুকে শুধু সবজি ছাড়া আর কিছু সেবনের অনুমতি দেন নি চিকিৎসকরা। আর সেই পরীক্ষা দিতে শুরু করলেন প্রেমিক ঝাং জিয়াফেং। তিনি তার প্রেমিকার পাশ থেকে সরে যান নি। তার পাশে থেকে সব সময় নার্সিং বা সেবা করেছেন।দিন রাত মিলিয়ে তিনি তার সেবা করেছেন। চিকিৎসকরা যখন তাকে বলেছেন, ঝাং সিয়াওয়ুর সচেতনতা ফিরেছে কিছুটা, তারপরও তিনি সেখান থেকে সরে যেতে অস্বীকৃতি জানান। এভাবে একদিন, দু’দিন নয়, টানা দু’বছর পর ঝাং সিয়াওয়ু সুস্থ হয়ে উঠেছেন তার ভালবাসায়। সচেতন হয়েই ঝাং সিয়াওয়ুয়ের প্রথম উচ্চারিত শব্দ ছিল তার প্রেমিক ঝাং জিয়াফেংয়ের নাম। শেষে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে ঝাং জিয়াফেং প্রমাণ করেছেন, সত্যিকার ভালবাসা সবকিছুকে অতিক্রম করতে পারে- পুরনো এই মতবাদকে।
এ ঘটনাটি চীনের আনহুই প্রদেশের বেঙ্গবু শহরের। অবিশ্বাস্য এই কাহিনীর সময়কাল ২০০৮ থেকে ২০১০ সাল। তবে বিষয়টি সবেমাত্র প্রকাশিত হয়েছে। কারণ, চীনা কর্তৃপক্ষ ঝাও জিয়াফেংকে তার প্রেমিকার প্রতি একাগ্রতার জন্য পুরস্কার করেছে। তখনই বিষয়টি মিডিয়ায় প্রকাশ পায়। চীনা মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, জিয়াফেং এবং সিয়াওয়ু মাধ্যমিক একটি স্কুলের সহপাঠী ছিলেন। ১৯ বছর বয়সে তারা ২০০৭ সালে প্রেমে পড়ে যান। ২০০৮ সালে ২০ বছর বয়সী সিয়াওয়ু বিকল হয়ে পড়েন এবং তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। এতে পরীক্ষায় ধরা পড়ে হাইড্রোসেফালাস।
এটি ব্রেনের একটি রোগ। এ রোগে ব্রেণের ভিতর তরল পদার্থ জমা হতে থাকে। এ জন্য জরুরি ভিত্তিতে তার অপারেশন প্রয়োজন হলো। কিন্তু ব্যর্থ হলো অপারেশন। এতে সিয়াওয়ু রইলেন শুধু সবজি ভক্ষণ করে বেঁচে থাকার মতো অবস্থায়। এতে তার পরিবার ও প্রেমিক ভেঙে পড়েন। কিন্তু সেই ভেঙে পড়া থেকে শক্তি সঞ্চয় করেন তার প্রেমিক। তিনি সিয়াওয়ুর সেবাযতেœর দায়িত্ব নেন। সিয়াওয়ুর মা ঝু জিয়ানমেই প্রথম কয়েকদিনে জিয়াফেংকে নতুন প্রেমিকা খুঁজে নিতে বলেছিলেন। কিন্তু জিয়াফেং রাজি হন নি। তিনি প্রেমের পরীক্ষায় নামে।