অবিশ্বাস্য জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এতে আরেকবার আসরের শেষ ষোলো থেকে ছিটকে গেল প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে প্রথম লেগে ২-০ গোলে জেতা দলটি বুধবার রাতে ঘরের মাঠে ফিরতি লেগে ৩-১ গোলে হার দেখে। আর দুই লেগ মিলিয়ে ৩-৩ সমতায় থাকায় অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা নিয়ে শেষ আটের টিকিট কাটে ওলে গানার সুলশারের ম্যানইউ। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে ম্যানইউ প্রথম দল, যারা ঘরের মাঠে পরিষ্কার ২-০ ব্যবধানে হেরেও ফিরতি লেগ জিতে উতরে গেল নকআউট পর্বে।
প্যারিসের পার্ক ডি প্রিন্সেস মাঠে ম্যানইউর ঐতিহাসিক জয়ের রূপকার বেলজিয়ান স্ট্রাইকার রমেলু লুকাকু। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই রেড ডেভিলদের এগিয়ে দেন লুকাকু। পিএসজির জার্মান ডিফেন্ডার থিলো কেহরার ব্যাক পাস দেন তার সতীর্থ থিয়াগো সিলভাকে।
কিন্তু বল সিলভার কাছে পৌঁছানোর আগেই সেটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন লুকাকু। এরপর দুরূহ কোণ থেকে জড়িয়ে দেন পিএসজির জালে।
মিনিট দশেক বাদেই সমতায় ফেরে পিএসজি। কিলিয়ান এমবাপ্পের ক্রস থেকে গোল করে ম্যানইউর শেষ আটে যাওয়ার পথটা কঠিন করে তুলেন স্প্যানিশ তারকা হুয়ান বার্নাট। কিন্তু ৩০তম মিনিটে লুকাকুর দ্বিতীয় গোলে সম্ভাবনা উজ্জ্বল করে ইংলিশ জায়ান্টরা। এ গোলটিও পিএসজির পক্ষ থেকে উপহারই বলা যায়। রাশফোর্ডের শট ঠিকমতো বাগে নিতে পারেননি স্বাগতিক গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন। হাত ফসকে বেরিয়ে যাওয়া বল বাগে নিয়ে মুহূর্তেই জালে জড়ান লুকাকু। ম্যানইউর স্বপ্ন পূরণের জন্য তখন প্রয়োজন আর এক গোল। সেই গোলটি তারা পায় ইনজুরি টাইমের চতুর্থ মিনিটে। পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যানইউকে কোয়ার্টার ফাইনালে পাঠান মার্কোস রাশফোর্ড।
২০১৩-১৪ মৌসুমের পর চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ আটে উঠলো ম্যানইউ। আর গত তিন মৌসুমেই শেষ ষোলো থেকে ছিটকে গেল পিএসজি। এর আগে ২০১৬ সালে বার্সেলোনার বিপক্ষে প্রথম লেগে ৪-০ গোলে জিতেও ন্যু ক্যাম্পে ফিরতি লেগে ৬-১ ব্যবধানে হেরে বাদ পড়ে পিএসজি। গত বছর শেষ ষোলোতে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে দুই লেগেই পরাজিত হয় তারা। দলটির কাতারি মালিক নাসের আল খেলাইফি তাই ম্যাচের পর তিনি বলেন, ‘আমি দলের খেলা ও ফলাফলে খুবই হতাশ হয়েছি। সবাই জেতার জন্যই মাঠে নেমেছিল। কিন্তু আমার মনে হয়, ম্যানইউ দুটি গোল করে ফেলার পর দলের খেলোয়াড়দের মাঝে ভয়-সংশয় ঢুকে যায়। সেজন্যই নিজেদের সেরাটা আর দিতে পারেনি তারা।’
নির্ণায়ক যখন ভিএআর
বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ ষোলোর দুটি ম্যাচেরই ফল নির্ধারণ করেছে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর)। পিএসজির বিপক্ষে ম্যাচে ইনজুরি টাইমে (৯০+১) ডিয়োগো দালতের শট ডিবক্সে থাকা প্রেসনেল কিমপেম্বের বাহুতে লাগে। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি দামির স্কোমিনা। এএস রোমার বিপক্ষে পোর্তোর জয়টাও আসে ভিএআরের কল্যাণে। ১১৮তম মিনিট চলছে। দুই লেগ মিলিয়ে তখন ৩-৩ সমতায়। এমন মুহূর্তে পোর্তোর ফের্নান্দোকে নিজেদের ডিবক্সে ফেলে দেন রোমার আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি পেনাল্টি দেন পোর্তোকে। আর সুযোগটা কাজে লাগিয়ে তারা উঠে যায় শেষ আটে।