জঙ্গি সংগঠন বলে পরিচিত জৈশ ই মোহাম্মদ ইস্যুতে কি করবে পাকিস্তান! এটা এখন এক বড় প্রশ্ন। অবিলম্বে ও জরুরিভিত্তিতে ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতও তাই চায়। জৈশ ই মোহাম্মদদের প্রধান মাসুদ আজহারকে সারাবিশ্বের জন্য সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণার একটি প্রস্তাব বৃহস্পতিবার গ্রহণ করতে পারে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। তবে চীন এক্ষেত্রে বাগড়া দিতে পারে। তারা একটি ‘দায়িত্বশীল সমাধানের’ আহ্বান জানিয়েছে। বলা হয়েছে, এ সমাধানে আসা যায় শুধু সংলাপের মাধ্যমে। মাসুদ আজহার পাকিস্তানেই আছেন বলে সেদেশের সরকার এর আগে জানিয়েছে।ফলে এখন এ ইস্যুতে পাকিস্তান কি করে বা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কি সিদ্ধান্ত দেয় তা দেখার বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল পম্পেওর সঙ্গে সোমবার ওয়াশিংটনে সাক্ষাত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে। এরপর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে মাইক পম্পেও গুরুত্বারোপ করেছেন। মাসুদ আজহারকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী ঘোষণা করা হবে কিনা সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার একটি প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এ অবস্থায় এমন সব ইস্যুর সঙ্গে কাশ্মির বিরোধের বিষয়ে দৃষ্টি দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন। এ ইসুতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু কাং বলেছেন, ১২৬৭ স্যাংশন কমিটির আওতায় একজন ব্যক্তিকে সন্ত্রাসী আখ্যা দেয়ার বিষয়ে চীনের অবস্থান সুদৃঢ় ও সুস্পষ্ট। কমিটির কর্মপ্রক্রিয়া বিষয়ক আইনের অধীনে এবং দায়িত্বশীল আলোচনায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে চীন দায়িত্বশীলের অবস্থান নিয়েছে। এক্ষেত্রে শুধু আলোচনার মাধ্যমে আমরা একটি দায়িত্বশীল সমাধানে পৌঁছাতে পারি।
ওয়াশিংটনে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলেছেন, মাসুদ আজহারকে সন্ত্রাসী আখ্যা দেয়ার প্রস্তাবে বৃটেন ও ফ্রান্সের পাশাপাশি অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সময়ে তারা চাইছে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়ে তা পাস হোক নিরাপত্তা পরিষদে। আর এতে যাতে চীন ভেটো না দেয় এমন আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন। একই সঙ্গে পাকিস্তানের নেতাদের প্রতি এ বিষয়ে নমনীয় হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে যখন ভারতের আলোচনা হচ্ছিল তখন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন টেলিফোনে কথা বলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির সঙ্গে। এ সময় তারা এই ইস্যু সহ অন্য ইস্যুগুলোতেও কথা বলেন। ফোনকলের পরে জন বল্টন টুইটারে একটি সংক্ষিপ্ত বার্তা পোস্ট করেন। সোমবার বিকেলে ওই টুইটে তিনি লিখেছেন, জৈশ ই মোহাম্মদ ও পাকিস্তান থেকে পরিচালিত হয় এমন অন্য সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে অর্থপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশির সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে উৎসাহী করা হয়েছে। তিনি আমাকে নিশ্চিত করেছেন যে, সব সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে পাকিস্তান। একই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনে ব্যবস্থা নেবে।
একই দিন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে জন বল্টনকে ২৬ শে ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে ভারত আগ্রাসন চালিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বাইরের আগ্রাসনের জন্য শুধু আত্মরক্ষার্থে জবাব দিয়েছে পাকিস্তান।
(অনলাইন ডন অবলম্বনে)