একটা সময় অনেক অ্যানার্জি ছিল। কিন্তু ইতিমধ্যে লক্ষ্য করেছি আমি কিছুটা অলস হয়ে পড়েছি। এই বিষয়টি নিজেই অনুধাবন করতে পেরেছি। এই আলসেমিটা অচিরেই দূর করে ফেলতে হবে। নিজের এখনকার অবস্থা সম্পর্কে এভাবেই বললেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। তিনি আরো বলেন, অলস হওয়ার বিশেষ কিছু কারণও আছে। আমি কোনো ছুটিই পাই না। ইচ্ছে করলেও নিজের জন্য একটা দিন বের করতে পারি না।মাসের ত্রিশ দিনই আমাকে ক্যামেরার সামনে থাকতে হচ্ছে। শুটিং করতে হচ্ছে। ফলে আমার সন্তান ও পরিবারকে আমি সময় দিতে পারি না ঠিকমতো।
সিদ্ধান্ত নিয়েছি জমে থাকা কাজগুলো শেষ করে নিজের জন্য সময় বের করবো। এভাবে প্রতিদিন আর শুটিং করবো না। টিভি নাটকে এই সময়ে একটি গুঞ্জন রয়েছে যে, কতিপয় শিল্পীর কাছে একটি নাটকের বাজেটের বিশাল অংশ চলে যাচ্ছে। অর্থাৎ একটি নাটকের প্রধান দুজন শিল্পীর কাছেই বাজেটের সিংহভাগ চলে যায়। এ কারণে অনেক নির্মাতাকেই নাটক নির্মাণের ক্ষেত্রে সংকটে পড়তে হয়। বিষয়টিকে অপূর্ব কিভাবে দেখছেন? তিনি বলেন, যারা শিল্পীদের সম্মানি নিয়ে এমন মন্তব্য করেন সেটি তাদের একটা অজুহাত। এই সময়ে যে সকল শিল্পীর কথা তারা বলছেন তারা কেউ একদিনে এই অবস্থানে আসেনি। সবাই তাদের যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে কাজ করছেন। বরং আমি বলতে চাই, নির্মাতারা তাদের সম্মানির অংক আরো বাড়াতে পারেন।
এখন আমাদের বাজার ছোট না। শুধু টেলিভিশনের জন্যই নাটক নির্মাণ হচ্ছে না। ইউটিউবের জন্যও হচ্ছে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এই সময়ের কোনো শিল্পীই বসে নেই। প্রতিদিনই শুটিং করছেন। তাহলে কেন শিল্পীদের নিয়ে এভাবে বলতে হবে? একজন শিল্পী তার যোগ্যতানুযায়ী সম্মানি নিচ্ছেন। আমাদের এই সময়ে শিহাব শাহিন, মিজানুর রহমান আরিয়ানসহ এমন অনেক নির্মাতা আছেন যারা ভালো বাজেট নিয়ে কাজ করছেন। একজন নির্মাতাকে টিভি চ্যানেল কিংবা স্পন্সর প্রতিষ্ঠান থেকে ভালো বাজেট নিতে হলে তাকেও আগে সেই যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। টিভি নাটকের অনেকে এই সময়ে বড় পর্দায়ও কাজ করছেন। অপূর্বকেও দেখা গেছে এ মাধ্যমে। ‘গ্যাংস্টার রিটার্ন’ ছবির মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় তার অভিষেক হয়।
কিন্তু এই সময়ে তার হাতে কোনো চলচ্চিত্র নেই। চলচ্চিত্রে অভিনয় না করার কারণ কি? উত্তরে অপূর্ব বলেন, টেলিফিল্ম এবং ফিল্ম কখনো এক হতে পারে না। আমি টিভিতে অনেক সুন্দর সুন্দর ও বৈচিত্রময় চরিত্রে অভিনয় করেছি। এই চরিত্রগুলোকে ওভারকাম করার মতো যদি কোনো গল্প ও চরিত্র ফিল্মে না পাই তাহলে সেটি না করাই ভালো। সত্যি বলতে, আমার কাছে ভালো স্টোরির কোনো চলচ্চিত্রের প্রস্তাব আসে না। যদি এমন কোনো গল্প ও চরিত্র পাই তাহলে অবশ্যই কাজ করবো। জনপ্রিয় অভিনেতা অপূর্ব ভালো গান করেন। কিন্তু অভিনয় ব্যস্ততার কারণে এ মাধ্যমটিতে সময় দিতে পারেন না তিনি। তবে সুযোগ পেলেই কণ্ঠে গান নিয়ে হাজির হন। ঠিক তেমনই সম্প্রতি গানে গানে ডিরেক্টরস গিল্ড আয়োজিত বনভোজন মাতিয়ে এসেছেন।
ছোট পর্দার নির্মাতাদের আমন্ত্রণে এ আয়োজনে এক হয়েছিলেন নির্মাতাসহ অনেক অভিনয়শিল্পী। সেখানেই স্টেজে উঠে গানে গানে দর্শক মাতান অপূর্ব। ‘ওরে নীল দরিয়া’ ও ‘তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে’ শীর্ষক জনপ্রিয় দুটি গান গেয়ে শোনান তিনি। তার গানের সঙ্গে উপস্থিত সবাই হাততালি দিয়ে ও নেচে-গেয়ে বনভোজন মুখরিত করে তুলেন। অপূর্ব বলেন, আমি আসলে গানের নয়, অভিনয়ের মানুষ। আমি ভীষণ লাজুক একটা ছেলে। কেউ স্টেজে ডাকলে আমার অনেক লজ্জা লাগে। তারপরও আমি চেষ্টা করেছি সবাইকে বিনোদিত ও আনন্দিত করতে। এদিকে গেল শুক্রবার সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসানের ‘যদি একদিন’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। এই অভিনেতার সঙ্গে অপূর্ব সম্প্রতি অভিনয় করেছেন।
‘যদি একদিন’ ও তাহসান সম্পর্কে অভিমত জানতে চাইলে অপূর্ব বলেন, সিনেমা হলে গিয়ে ছবিটি এখনো আমার দেখা হয়নি। তবে তাহসান ডাবিং করার সময় ছবির শেষ দৃশ্যটি দেখেছি। অনেক ভালো লেগেছে। তাহসান চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করলে খুব ভালো করবে বলেও এই অভিনেতা মন্তব্য করেন।