নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে তারকা সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের একক অ্যালবাম ‘দীর্ঘশ্বাস’ প্রকাশ হয়। এই অ্যালবামের ‘পাগল বল’, ‘আনন্দ আশ্রম’, ‘কোনো কোনো রাত’ এবং ‘একতারা’ গানগুলো সেই সময় বেশ জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষ করে বাঙালি চেতনা ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিলে যাওয়ায় ‘একতারা’ গানটি পেয়ে যায় আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা। গানটির কথা এমন- ‘তোমরা একতারা বাজাইও না, দোতরা বাজাইও না…গিটার আর বঙ্গ বাজাওরে…একতারা বাজাইলে মনে পইড়া যায়, একদিন বাঙালি ছিলাম রে।’ গানটি প্রকাশের সময় তাতে গীতিকার এবং সুরকার হিসেবে সংগ্রহ লিখে প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকেই কুমার বিশ্বজিৎ গানটির গীতিকার ও সুরকারকে নানাভাবে খুঁজছিলেন। অবশেষে সংগীতশিল্পী সমরজিতের চেষ্টায় এই গানের গীতিকার এবং সুরকারকে খুঁজে পাওয়া গেল। সমরজিতের পরিচিত হলেন কলকাতার অধীর দাস। তার পরিচিত হলেন ‘একতারা’ গানের সুরকার কিশোর চ্যাটার্জি।অধীর জানতেন যে কিশোর দীর্ঘদিন ধরে কুমার বিশ্বজিতের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিলেন। অবশেষে সমরজিতের মাধ্যমে কুমার বিশ্বজিতের সঙ্গে কিশোরের দেখা হয় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমার বিশ্বজিতের বাসায়। কুমার বিশ্বজিতেরই নিমন্ত্রণে কিশোর চ্যাটার্জি গানটির স্বত্ব দিতে ঢাকায় এসেছিলেন। গানটি লিখেছেন লক্ষ্মী কান্ত রায়। কিশোর সুর করার পর দূরদর্শনে আশির দশকের শুরুতে একবার একটি শিশু গানটি গেয়েছিল। কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, অনেক আগে থেকেই আমি এই গানের গীতিকার সুরকারকে খোঁজার চেষ্টা করেছি। কারণ গানের সুরকার, গীতিকারের নাম ব্যবহার করা এটা তাদেরই প্রাপ্য, অধিকার। দীর্ঘদিন পর এভাবে সুরকারকেও খুঁজে পাওয়ার ঘটনা সত্যিই বিরল। কিশোর দা’র প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা তিনি আমার ডাকে সাড়া দিয়ে ঢাকায় এসেছেন, আমাকে সময় দিয়েছেন। আমাকে নতুন গানও দিয়েছেন। এখন আমি ‘একতারা’ গানটি নিয়ে কপিরাইট আইনে যাবো। দেশের বিভিন্ন সাইটে গানটি প্রকাশ করা আছে। তাদের কাছে আমার অনুরোধ নিজ দায়িত্বে এটি নামিয়ে ফেলার জন্য। কলকাতার নৈহাটির সন্তান কিশোর চ্যাটার্জি বলেন, কুমার বিশ্বজিৎ দাদার এই গানটি যখন শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়তা পায় তখন থেকেই তার সঙ্গে আমি যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার কোনো উপায় ছিল না। অবশেষে দাদার সঙ্গে দেখা হলো। আর সে সুবাদে ‘একতারা’ গানটি পেলো পূর্ণতা।