আমার হিসাবে টিউবলাইট খুব বেশি চলেনি। আবার অনেকের হিসাবে খুব ভালো চলেছে। আমার সব সময় মনে হয়েছে, ছবিটা ভুল সময়ে মুক্তি পেয়েছে। খুবই মিষ্টি আবেগে ভরা এক ছবি। দর্শক ওই ছবি (টিউবলাইট) দেখে কাঁদতে কাঁদতে বাইরে আসেন। তাঁরা মেনে নিতে পারেননি যে আমি ছবিতে মার খাচ্ছি। তাই আমার ভক্তদের ঈদ খারাপ হয়ে যায়। টিউবলাইট যখনই টিভিতে দেখানো হয়, তখনই আমার কাছে মেসেজ আর ফোন আসতে শুরু করে। সবাই একই কথা বলেন যে ছবিটা খুব ভালো। তাঁদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। আসলে ঈদের সময় সাধারণত সবাই বিনোদনমূলক ছবি দেখতে ভালোবাসেন। ভারত, দাবাং এ রকমই ছবি। এই ধরনের সিনেমাগুলো দেখে মানুষ ভরপুর মজা পাবে। উৎসবের সময় সবাই যে ধরনের ছবি দেখতে পছন্দ করেন, ভারত তেমনই।
এই ছবির প্রচারণায় আপনি একাধিকবার ক্যাটরিনা কাইফকে ‘থ্যাংক ইউ প্রিয়াঙ্কা’ বলেছেন। এর কারণ কী?
হ্যাঁ, প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে তো ধন্যবাদ জানানোই উচিত। এই ছবির শুটিং শুরু হওয়ার পাঁচ দিন আগে প্রিয়াঙ্কা এসে আমাকে জানায় যে ও ছবিটা করতে পারবে না। ও না বলেছে বলেই ক্যাটরিনা এত ভালো চরিত্রটা পেয়েছে। তবে প্রিয়াঙ্কা এখন যে স্ত্রীর ভূমিকা পালন করছে, তা এর থেকে ভালো চরিত্র।
ছবির ট্রেলার দেখে প্রিয়াঙ্কা কী কিছু প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন?
না। এখনো পর্যন্ত ও ফিল্ম–সংক্রান্ত কোনো কথা আমাকে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেনি। আমি তো ওর সুবিধামতো শুটিংয়ের তারিখ ফেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার বোন অর্পিতা বলল যে ও (প্রিয়াঙ্কা) কত দিন পর এই ছবিতে কাজ করতে পারবে, তা জানা নেই। কারণ, ওর বিয়ে হচ্ছে। তবে যা হয়েছে ভালোই হয়েছে। আমি ওর সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছিলাম। আজ যে ক্যারিয়ারের জন্য ও এত পরিশ্রম করেছিল, আজ তার জায়গায় ও নিজের ব্যক্তিজীবনকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। এটা একান্তই ওর সিদ্ধান্ত। ও হয়তো ভাবছে সালমান ওর সঙ্গে আর কাজ করবে না।
তার মানে ভবিষ্যতে আপনি কি প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে কাজ করবেন না?
আমি কখনো বলিনি যে ওর সঙ্গে কাজ করব না। আপনি ওকে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন। ও যদি কোনো ভালো চরিত্র নিয়ে আমার কাছে আসে নিশ্চয় করব।
ভারত ছবিটা পিতা-পুত্রের সম্পর্কের ওপর। আপনার সঙ্গে আপনার বাবার সম্পর্কের সমীকরণ কতটা বদলেছে?
খুব একটা বদলায়নি। আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন তাঁকে সেভাবে পাইনি। অধিকাংশ সময় তিনি কাজে ব্যস্ত থাকতেন। আর আমি যখন একটু বড় হলাম, তখন তিনি খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। কারণ, তাঁর হাতে কাজ ছিল না। এত বড় লেখক হয়ে কাজ ছাড়া থাকা খুবই কষ্টের ছিল তাঁর জন্য। টানা চার বছর এইভাবে কাটিয়েছেন। তবু আমাদের কখনো কিছু বুঝতে দেননি। তারপর তিনি আবার কাজ পেতে লাগলেন। আর আমিও কাজ করা শুরু করলাম। আমরা একে অপরের খুবই কাছের। এখন তো আমাদের সম্পর্ক খুব মিষ্টি। আমরা ভালো বন্ধু। তাঁর বন্ধুরা আমার বন্ধু। আবার আমার বন্ধুরা তাঁর বন্ধু। আমি বাড়িতে না থাকলেও আমার বন্ধুদের কোনো সমস্যা হয় না। ওরা আমার বাড়িতে এসে আমার বাবার সঙ্গে সময় কাটায়। মজা করে। আড্ডা মারে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হওয়া উপহাস আর সমালোচনাকে কীভাবে নেন?
আমি এসব দেখি না। আমার যা পোস্ট করার তা করে ফেলি। এরপর আমি কোনো কমেন্ট দেখি না। সারা দিন কমেন্ট পড়ব না নিজের কাজ করব?
সম্প্রতি ভারত ছবির প্রচারণার সময় আপনি বলেছিলেন যে এই ছবির জন্য ক্যাটরিনার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া উচিত। আপনি নিজে পুরস্কারে কতটা আস্থা রাখেন?
জাতীয় বা অন্য কোনো পুরস্কার আমি চাই না। আমি জাতীয় পুরস্কারে বিশ্বাস করি না। আমি শুধু প্রতিদান চাই। জাতীয় পুরস্কার আমি তখনই পেয়ে যাই, যখন সবাই আমার ছবি দেখে। সারা দেশ আমার ছবি দেখছে—এর থেকে বড় পুরস্কার আর কী হতে পারে।
ঐতিহাসিক ব্যক্তিদের বায়োপিক বানানো এখনকার বলিউড ধারা। আপনি কোন চরিত্রে অভিনয় করতে চাইবেন?
আমি চেঙ্গিস খাঁর চরিত্র করতে চাইব।
শেষ প্রশ্ন, এবারের ঈদ নিয়ে কী পরিকল্পনা?
প্রতিবার যেমন হয়। পরিবার, বন্ধুবান্ধব আর ভক্তদের সঙ্গে সময় কাটাব। এখনো পর্যন্ত এটাই পরিকল্পনা।