রান মেশিন। সাকিব আল হাসানকে এমন আখ্যা দিচ্ছেন বোদ্ধা ধারাভাষ্যকাররাই। ব্যাটে-বলে চমক দিয়েই আসর শুরু করেছিলেন সাকিব। আর শেষটাও রাঙালেন রেকর্ডের পাতায় ঘষামাজা করে। গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাট হাতে অর্ধশতক হাঁকান সাকিব আল হাসান। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেয়ার আগে ৭৭ বলে করেন ৬৪ রান। আর সাকিবের নাম উঠে পড়ে গর্বের একাধিক রেকর্ডে। এবারের বিশ্বকাপে সাকিবের সংগ্রহ ৬০৬ রান।
বিশ্বকাপের এক আসরে ৬০০ রানের কৃতিত্ব দেখানো মাত্র তৃতীয় ব্যাটসম্যান তিনি। ক্রিকেটের মহামঞ্চে এমন কৃতিত্ব রয়েছে আর কেবল দুই মহারথী ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকার ও ম্যাথিউ হেইডেনের। দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০০৩ বিশ্বকাপে ভারতীয় লিজেন্ড শচীন টেন্ডুলকার করেন ৬৭৩ রান। আর ক্যারিবিয়ানে ২০০৭ বিশ্বকাপে ৬৫৯ রান আসে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ম্যাথিউ হেইডেনের ব্যাট থেকে। তবে ব্যাটিং গড়ে এ দুজনের চেয়ে এগিয়ে সাকিব আল হাসান। শচীন-হেইডেনই দুজনই এ রান করেন ১১ ম্যাচে। এতে শচীনের ৬১.১৮ ও হেইডেনের গড় ছিল ৭৩.২২। গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে আসরে সাকিবের ব্যাটিং গড় দাঁড়ায় ৮৬.৫৭-এ।
এবারের বিশ্বকাপে সাতটি ৫০-উর্ধ্ব রানের ইনিংস খেললেন সাকিব। এতেও শচীন টেন্ডুলকারের রেকর্ড স্পর্শ করলেন তিনি। বিশ্বকাপের এক আসরে কেবল শচীনেরই এমন কীর্তি রয়েছে। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে এবারের বিশ্বকাপে সাকিবের ব্যাট থেকে এলো দুটি সেঞ্চুরি ও পাঁচটি হাফসেঞ্চুরি। ২০০৩’র আসরে এক সেঞ্চুরির সঙ্গে ৬টি ফিফটি হাঁকিয়েছিলেন শচীন।
এবারের মঞ্চে পা রাখার আগে বিশ্বকাপে (২০০৭, ২০১১ ও ২০১৫) ব্যাট হাতে সাকিবের মোট সংগ্রহ ছিল ৫৩৯ রান। গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা শেষে ক্রিকেটের মহাযজ্ঞে ২৯ ম্যাচে সাকিবের সংগ্রহ দাঁড়ালো ১১৪৬ রানে। এতে বিশ্বকাপে সর্বকালের সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের তালিকায় জাভেদ মিঁয়াদাদ, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, মাহেলা জয়াবর্ধনের মতো গ্রেট ব্যাটসম্যানদের পেছনে ফেলেন সাকিব। তালিকায় নবম স্থানে উঠে এলো সাকিব আল হাসানের নাম। এমন তালিকার শীর্ষ তিন তারকার সঙ্গে সাকিবের ব্যবধানটা একটু বড়। তবে চতুর্থ স্থানে ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার সংগ্রহ ১২২৫ রান। ১৯৯২ থেকে ক্যারিয়ারে ছয় বিশ্বকাপের ৪৫ ম্যাচে ২২৭৮ রান নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছেন শচীন টেন্ডুলকার।
২০১৯ বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারের বড় দাবিদার সাকিব আল হাসানই। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এক আসরে কোনো খেলোয়াড়ের ৪০০ রান ও ১০ উইকেটের নজির ছিল না। এবার ব্যাটে ৬০৬ রানের সঙ্গে বল হাতে সাকিবের শিকার ১১ উইকেট। আসরের ইতিহাসে ১০০০ রান ৩০ উইকেটের কীর্তি গড়া প্রথম খেলোয়াড়ও সাকিব।