পাকুন্দিয়া উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মোছা. সাবেকুন্নাহারের বিরুদ্ধে সরকারি ধান কেনায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে ধান কিনে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। টাকা দিলে টোকেন দেন, টাকা না দিলে টোকেন দেন না। এমন অভিযোগ এনে গতকাল বুধবার সকালে ভুক্তভোগী কৃষকরা পৌরসদর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পৌর কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম আরিফ, কৃষক নেতা দুলাল মিয়া, আলমগীর হোসেন জনি ও মাসুদ মিয়া। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়।

ভুক্তভোগী কৃষক ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এক হাজার ৪০ টাকা মন দরে গত ২৫শে মে থেকে পাকুন্দিয়ায় প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা কার্যক্রম শুরু হয়। উপজেলা কৃষি বিভাগ প্রথম দফায় ২৮০ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।
গত ১০ই জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফায় ধান কেনা কার্যক্রম শুরু হয়। এ দফায় ৪৬৯ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কৃষকদের কাছ থেকে চিটামুক্ত, উজ্জল সোনালী রংয়ের ১৪ শতাংশ আর্দ্র ধান সংগ্রহ করে সংরক্ষণের নিয়ম থাকলেও খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার ব্যক্তিস্বার্থে তা মানা হচ্ছে না বলে কৃষকরা অভিযোগ করছেন। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিম্নমানের ধান কেনা হচ্ছে। সরকারি ধান ক্রয়ের বিষয়ে কৃষকদের উদ্দেশ্যে সমগ্র উপজেলায় মাইকিং করার কথা থাকলেও গুদাম কর্মকর্তা তা করেননি।

স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, গত ২৫শে মে থেকে ধান কেনা কার্যক্রম শুরু হলে কৃষকরা ধান দেয়ার জন্য নমুনা নিয়ে উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা সাবেকুন্নাহারের কাছে আর্দ্র পরীক্ষা করাতে যান। ধানে চিটা আছে, ধান ময়লাযুক্ত, ভিজা, ধান ভালো না- এমন অজুহাতে প্রান্তিক কৃষকদের ধান ফিরিয়ে দিচ্ছেন খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা। অথচ সেই ধানই নিরীহ কৃষকদের কাছ থেকে টন প্রতি দুই থেকে তিন হাজার করে টাকা নিয়ে গুদামে সরবরাহ করার জন্য কৃষকের হাতে টোকেন দিচ্ছেন। যে কৃষক টাকা দিতে পারছেন না, তাকে নানা অজুুহাতে ফিরিয়ে দিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) সাবেকুন্নাহারের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কিছু রাজনৈতিক নেতা পাঁচ-সাতটি করে কার্ড নিয়ে আসে ধান কেনার জন্য। আমি তাদের দাবি পূরণ করতে না পারায় তারা আমার ওপর ক্ষুব্ধ। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন ইউএনও মহোদয়ের মনোনীত দু’জন কর্মকর্তা পরিদর্শক হিসেবে উপস্থিত থাকেন। তাদের উপস্থিতিতেই ধান ক্রয় করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদ হাসান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।