কাশ্মীর নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই ভারতের সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত বলেছেন, দেশটির সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, পুলওয়ামার বদলা নিতে শুধু বালাকোটই নয়, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পুরো মাত্রার যুদ্ধের জন্য মুখিয়ে ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। খবর সংবাদ প্রতিদিনের।
এমনকি পাকিস্তানের ভেতর ঢুকে শিক্ষা দেয়ার সব প্রস্তুতিই নেয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে বিকল্প একাধিক পথও ভেবে রাখা হয়েছিল। বালাকোট দিয়ে আকাশপথে হামলাও সেই বিকল্প ভাবনার মধ্যেই ছিল এবং তা দিয়েই পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটাতে চেয়েছিল ভারতীয় সেনা।
সোমবার দিল্লিতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে নিজেদের স্ট্র্যাটেজির কথা এভাবে ভাগ করে নেন ভারতীয় সেনাপ্রধান। এরপরই ফের যুদ্ধ নিয়ে উত্তেজনার চোরাস্রোত বইতে শুরু করেছে।
আসলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে নানা বিষয়ে চাপে রাখলেও, যুদ্ধের মতো বড়সড় সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভারতকে বিস্তর ভাবতে হয়। সে দেশের তরফে উসকানি একেবারে চরম পর্যায়ে না পৌঁছলে ভারতও সরাসরি রণক্ষেত্রে নামবে না। তবে ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ের ওপর আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার আর স্থির থাকতে পারেননি কেউ। শুরু হয়ে যায় শিক্ষা দেয়ার প্রস্তুতি।
সিআরপিএফ জওয়ানদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তানের ওপর ঝাঁপিতে পড়তে মরিয়া হয়েছিল ভারতীয় সেনা। পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে একেবারে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের দিক থেকে গত কয়েকবছর ধরে যে আক্রমণ এসেছে ভারতের মাটিতে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই একটু একটু প্রস্তুতি চলছিল।
১১ হাজার রুপি টাকার আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করা ছিল সেনাবাহিনীর শিবিরে, যা কিনা মোট প্রয়োজনের ৯৫ শতাংশ। পুলওয়ামা হামলার পর আরও ৭ হাজার কোটি রুপি বিশেষ আগ্নেয়াস্ত্রের বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল, যাতে যুদ্ধক্ষেত্রে একেবারে পূর্ণ শক্তি নিয়ে লড়াই চালাতে পারে। আর এসব নিয়েই যুদ্ধেই ঝাঁপিয়ে পড়তে চেয়েছিল সেনাবাহিনী। তৈরি ছিল বিকল্প পদক্ষেপের নীল নকশাও।
শেষমেশ অবশ্য সরাসরি যুদ্ধে যাওয়ার দরকার হয়নি। হামলার ১২ দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের বালাকোট সীমান্তে ঢুকে বিমান হামলা চালিয়ে সীমান্তের জঙ্গি ঘাঁটিগুলো গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় বিমান বাহিনী। প্রয়োজনে আরও অগ্রসর হওয়াই যেতো যদি পাকিস্তান বড় ধরনের কোনও পদক্ষেপ নিতো। কিন্তু পাকিস্তান খুব কিছু একটা করতে পারেনি। তাই যুদ্ধ থেকে বিরত থেকেছে ভারত।