সৌদি আরবে হামলা থামানোর প্রস্তাব হুতির, সমর্থন জাতিসংঘের

সৌদি আরবের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছে ইয়েমেন-ভিত্তিক বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতি। ইরান-সমর্থিত দলটি তাদের শুক্রবারের প্রস্তাবে সৌদিতে হামলা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাদের এমন প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘ। ইয়েমেনে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, এই প্রস্তাব চূড়ান্ত হলে পাঁচ বছরের রক্তাক্ত সংঘাতের সমাপ্তি হতে পারে। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
গ্রিফিথসকে উদ্ধৃত করে খবরে বলা হয়, পূর্ণ বিশ্বাসে হুতিদের প্রস্তাবের বাস্তবায়ন ইয়েমেনে যুদ্ধের অবসান ঘটানোর ব্যাপারে সদিচ্ছার একটি শক্তিশালী বার্তা হতে পারে। এটি বহু বছর ধরে চলমান যুদ্ধের ইতি টানতে পারে। সম্প্রতি সৌদি আরবের রাষ্ট্র-মালিকানাধীন তেল সংস্থা আরামকোর দুটি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে হুতি। এতে সৌদির তেল রপ্তানি সংকটের মুখে পড়েছে। হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র। হামলা ঘিরে পারস্য অঞ্চলে বিরাজ করছে যুদ্ধের উত্তেজনা। যেকোনো মুহূর্তে যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা রয়েছে। ইরান অবশ্য হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ওই হামলার এক সপ্তাহ পর হুতি বিদ্রোহীদের কাছ থেকে শান্তি প্রস্তাব এল।
হুতিরা দেশটির প্রেসিডেন্ট মানসুর হাদিকে হটিয়ে রাজধানী সানার দখল নিলে হাদিরসমর্থনে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনে শিয়াপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের জবাবে হুতি বিদ্রোহীরাও সময়-সময় সৌদি আরবে প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়ে আসছে। সবশেষ গত সপ্তাহে সৌদির তেল স্থাপনায় হামলার দাবি করে তারা। হামলার পরপর তাদের এমন প্রস্তাবে চমকে গেছেন অনেকেই।
শুক্রবার টেলিভিশনে দেয়া শান্তি প্রস্তাবের ঘোষণায় হুতি সুপ্রিম পলিটিক্যাল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মাহদি আল-মাশাত বলেন, সৌদি আরবে সব ধরনের হামলার সমাপ্তি টানবে হুতিরা। তিনি ইয়েমেনের সব পক্ষকে জাতীয় সমঝোতার লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানান।
এদিকে, ইয়েমেনের রাজধানী সানা সহ অনেকাংশই হুতিদের দখলে। পাঁচ বছর ধরে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে তাদের চলমান এই যুদ্ধে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে ইয়েমেনের। দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে দেশটির এক কোটির বেশি জনগণ। এমতাবস্তায় এই সংঘাত শেষ করার ইচ্ছার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে জাতিসংঘ।
হুতি বিদ্রোহীদের প্রস্তাবে বেশ সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল জুবেইর শনিবার প্রস্তাবটি নিয়ে বলেন, আমরা অন্যান্য পক্ষকে তাদের কাজ দিয়ে বিবেচনা করি, কথা দিয়ে নয়। আমরা দেখবো, তারা আসলেই এমনটা করে কিনা।
এদিকে, গ্রিফিথস বলেন, এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে সহিংসতা, সামরিক উত্তেজনা ও অপ্রয়োজনীয় বাকবিত-া কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ কর সামনে এগিয়ে যাওয়া দরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *