সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গত পাঁচ আসরে গ্রুপ পর্বের বাধা পেরুতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে ছোটদের আসরগুলোতে একের পর এক সফলতা আসছে। সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের পাঁচ আসরের দুটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। গতকাল নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ ফুটবলের ফাইনালে ভুটানকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে এশিয়ান কাপ বাছাই প্লে-অফের একটি ম্যাচ বাদ দিলে ভুটানের সঙ্গে কোনো পর্যায়েই হারের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। অনূর্ধ্ব-১৮ সাফেই দুবারের দেখায় কোনো গোল হজম না করে দুবারই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে এর আগের টুর্নামেন্টে তাদের মাঠেই ২-০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। কাঠমান্ডুতেও অব্যাহত থাকলো জয়ের ধারা।
এবারের জয়টা আরো বড় ব্যবধানে। গতকাল ম্যাচের প্রথমার্ধেই হয়েছে তিনটি গোল। কিক অফ বাঁশির ২ মিনিটেই ডিফেন্ডার তানভীর হোসেনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। লম্বা থ্রো-ইন থেকে হেডে বাংলাদেশের গোলের হিসাব খোলেন এই সেন্টারব্যাক। গোল হজমের পর সমতায় ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল ভুটান। অ্যাটাকিং থার্ডে তাদের দ্রুতগতির পাসিং ও জায়গা বদল করে খেলা ছিল দৃষ্টিনন্দন। কিন্তু তিন সেন্টারব্যাক তানভীর, ইয়াসিন আরাফাত ও রাহাদ মিয়াকে নিয়ে গড়া বাংলাদেশের জমাট রক্ষণভাগ ভাঙা সম্ভব হয়নি তাদের। বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা প্রত্যেকেই প্রিমিয়ার লীগের খেলোয়াড়। অধিনায়ক ইয়াসিন তো মূল জাতীয় দলেরই সদস্য। বাকিদের অধিকাংশই সাইফের যুব দল পেরিয়ে গত মৌসুমে খেলেছেন মূল দলের হয়ে। অন্যদিকে একাডেমির ফুটবলারদের নিয়েই সাফে এসেছে ভুটান। গতকালের আগ পর্যন্ত তারা টুর্নামেন্টে খেলেছেও দুর্দান্ত। এই টুর্নামেন্টের শুরুতেই ভুটান চমক দেখায় দুইবারের চ্যাম্পিয়ন নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে সেমিতে উঠেছিল তারা। অভিজ্ঞ বাংলাদেশের সামনে এসে থামতেই হলো।
২৭ মিনিটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় গোলটি ফয়সাল হোসেন ফাহিম ও ফাহিম মোরশেদের রসায়নে। প্রতি-আক্রমণে মিডফিল্ডার ফাহিমের পাসে বক্সের বাম প্রান্ত থেকে ২-০ করেন উইঙ্গার ফাহিম মোরশেদ। এই গোলে ফাহিমের কৃতিত্বের চেয়ে ভুটানিজ গোলরক্ষকের দায়ই বেশি। অবশ্য বাম প্রান্তে ফাহিমকে ঠেকাতে ভুটানিজ ডিফেন্ডারদের রুখতে বেগ পেতে হয়েছে। তার দুর্দান্ত গতি ও বল নিয়ন্ত্রণের কাছে প্রতিপক্ষ রাইট ব্যাককে মনে হয়েছে নস্যি। এর ৫ মিনিট পরেই তার ক্লাব দলের সতীর্থ মারাজ হোসেনের গোলটা ছিল দুর্দান্ত। বক্সের বাইরে থেকে মারাজের বুলেটগতির শট প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক ঝাঁপালেও নাগাল পাননি। ভুটানিজদের জালে এক হালি পূরণ করেছেন বদলি মিডফিল্ডার দীপক। শেষ বাঁশি বাজার আগে বক্সের বাইরে থেকে বুলেটগতির শটে গোলটি করেছেন তিনি।
এর আগে ‘বি’ গ্রুপে রানার্সআপ হয়ে সেমিফাইনালে আসে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৩-০ গোলে হারানোর পর, গোলশূন্য ড্র হয় ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি। ভারত ও বাংলাদেশের পয়েন্ট ও গোল পার্থক্য সমান হওয়ায় আসরের নিয়ম অনুসারে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ করতে লটারি হয়। সেখানে জিতে গ্রুপ সেরা হয় ভারত। টুর্নামেন্টের ফাইনাল আগামীকাল। সেখানে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ মালদ্বীপকে হারানো ভারত।