রূপগঞ্জে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নগদ ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় ২ হাজার পিস ইয়াবাসহ জামাল হোসেন মৃধা (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ী ও তার দুই সহযোগীকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গতকাল ভোর রাতে উপজেলার তারাবো পৌরসভার রসুলপুর এলাকায় ওই ব্যবসায়ীর নিজ বাড়ি থেকে তিনজনকে আটক করা হয়। আটককৃত অপর দুইজন হলেন- জামাল হোসেনের দুই সহযোগী মোস্তফা (৪৮) ও মানিক (৩৪)। আটক জামাল উদ্দিন মৃধা বরিশালের উজিরপুর থানার ধামুড়া এলাকার মৃত ইউসুফ আলী মৃধার ছেলে।
জেলা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. মিজান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পারে, স্থানীয় কয়েল ব্যবসায়ী জামাল হোসেন মৃধার বাড়িতে এক লাখ পিস ইয়াবার একটি চালান প্রবেশ করবে। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ মঙ্গলবার বিকেল থেকে ওই এলাকায় নজরদারি শুরু করে। মধ্য রাত থেকে জামাল হোসেন মৃধার চারতলা বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্লাটে তল্লাশি চালানো হয়।
এসময় একটি ট্রাঙ্ক থেকে নগদ এক কোটি টাকা এবং আলমারির ভেতর থেকে আরো ২৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে বাড়িটির নিচ তলায় জামাল হোসেনের ব্যক্তিগত অফিস থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার হয়। এ ঘটনার খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ভোর রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
গতকাল বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, আটককৃত ব্যবসায়ী জামাল হোসেন মৃধা নিজেকে তিনটি কয়েল কারখানার মলিক দাবি করলেও এর কোন বৈধ লাইসেন্স দেখাতে পারেননি। জব্দকৃত টাকার বৈধ কোন উৎসও দেখাতে পারেননি তিনি। এই টাকাগুলো হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করার জন্য রাখা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া কয়েল ব্যবসার আড়ালে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে বলেও সন্দেহ রয়েছে। রিমান্ডের আবেদন করে তাকে আদালতে পাঠানো হবে। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করলে তাকে টাকার উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
পুলিশ সুপার আরো জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগে মানি লন্ডারিং আইনে, ইয়াবা ব্যবসার অভিযোগে মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এবং আবাসিক এলাকায় কয়েল কারখানা নির্মাণ করে পরিবেশ দূষণের অপরাধে পরিবেশ আইনে মোট তিনটি মামলা দায়ের করা হবে। পাশাপাশি জামাল হোসেন বাড়িতে এতো টাকা কি কারণে রেখেছেন, ইয়াবা ব্যবসা করে কতো টাকার মালিক হয়েছেন এবং তিনি কোন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।