চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা মাঝে বিরতির পর চলতি বছর আবারো কাজে ফিরেছেন। এ বছর নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূলের ‘জ্যাম’ ও ‘গাঙচিল’ নামে দুটি ছবিতে অভিনয় করছেন তিনি। এ দুটি সিনেমার বিষয়ে জানতে চাইলে পূর্ণিমা বলেন, চলতি মাসে নোয়াখালিতে ‘গাঙচিল’ ছবির বেশকিছু অংশের কাজ সবশেষ করেছি। আবার জানুয়ারিতে এ সিনেমার শুটিং শুরু হবে। অনেক আর্টিস্ট এ সিনেমায়। সবার সঙ্গে তারিখ মিলিয়ে কাজটি করছি। বেশ ভালো হচ্ছে। এছাড়া একই নির্মাতার ‘জ্যাম’ ছবিতেও কাজ করছি আমি।
‘গাঙচিল’ সিনেমায় পূর্ণিমাকে দর্শকরা মোহনা চরিত্রে দেখতে পাবেন। এ ছবিতে তার বিপরীতে ফেরদৌস অভিনয় করছেন। নোয়াখালীর সুবর্ণচরের বাসিন্দাদের জীবনের নানা ঘটনা এই ছবির প্রধান উপজীব্য। এই অঞ্চলের এনজিওকর্মী হিসেবে পূর্ণিমাকে দর্শকরা বড় পর্দায় দেখতে পাবেন। আর ফেরদৌস সাংবাদিক চরিত্রে অভিনয় করছেন। চলচ্চিত্র নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ ছবিতে অভিনয় করে দর্শকদের অবাক করেন পূর্ণিমা।
এই ছবির মাধ্যমে অল্প বয়সেই রূপালি পর্দায় নায়িকা হিসেবে ঝলমলে এক অভিষেক হয়েছিল তার। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া এ প্রথম ছবিতে পূর্ণিমা নায়ক হিসেবে পান রিয়াজকে। এরপর ‘নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি’, ‘মেঘলা আকাশ’, ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘মেঘের পরে মেঘ’, টাকা’, ‘সুভা’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’, ‘মাটির ঠিকানা’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় বাংলা সিনেমায় অভিনয় করে তিনি পান দর্শকপ্রিয়তা। ২০১০ সালে কাজী হায়াত পরিচালিত ‘ওরা আমাকে ভালো হতে দিল না’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে তিনি পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। মাঝে চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকলেও আবারো নিয়মিত কাজ করছেন পূর্ণিমা। বর্তমানে সিনেমার অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, অনেক ছবি নির্মাণ হচ্ছে, রিলিজও হচ্ছে। কিছু সিনেমা দর্শকরা পছন্দ করছেন। তবে ব্যবসাসফল ছবির সংখ্যা কমে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সিনেমা হিট হলেও প্রযোজকরা টাকা ফেরত পাচ্ছে না।
এমনিতে তো ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে যে, দর্শক সিনেমা হলে গিয়ে বলছে ওমুক ছবি দেখে আসো। এই হয়েছে সেই হয়েছে। ফেসবুকে ঝড় উঠলেও প্রকৃতপক্ষে প্রযোজক কতটুকু লাভবান হচ্ছেন? পূর্ণিমা আরো বলেন, এখন কি কোনো ছবির গান দেখে বা শুনে দর্শক ওই ছবির গান গুনগুন করে গাইছে বা মনে রাখছে? একটা সময় এটা ছিল। সবশেষ ‘মনপুরা’, ‘পোড়ামন টু’, ‘আয়নাবাজি’ ছবির বেশকিছু গান দর্শকরা পছন্দ করেছেন। সেই সঙ্গে জুটিরও অভাব রয়েছে। আগে একটা নতুন জুটি হিট সিনেমা দিলে তাদেরকে ঘিরে নতুন নতুন সিনেমা নির্মাণ হতো। সেটা তো এখন একদমই চোখে পড়ছে না। সিনেমা হলে গিয়ে টাকা খরচ করে স্বচ্ছ ও ভালো মানের ছবি দর্শকরা দেখতেই চান বলে মনে করেন পূর্ণিমা। বর্তমানে নতুন সিনেমার প্রস্তাব পেলেও ব্যাটে-বলে না মেলার কারণে নতুন সিনেমায় সাইন এখনো করেননি তিনি। ‘জ্যাম’ ছবিতে আরিফিন শুভর বিপরীতে এবং ‘গাঙচিল’ সিনেমায় ফেরদৌসের বিপরীতে অভিনয় করছেন পূর্ণিমা। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জায়গায় শপিং মলের পাশাপাশি সিনেপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে।
এ বিষয়কে সাধুবাদ জানিয়ে পূর্ণিমা সবশেষে বলেন, আমার মনে হয় জেলা পর্যায়ে শপিং মলের পাশাপাশি যদি সিনেপ্লেক্স তৈরি হয় তাহলে দর্শকরা অবশ্যই সিনেমা দেখতে যাবেন। কারণ শপিং মল সব সময় জমজমাট থাকে। আর সিনেমা মুক্তির সময় যদি ঠিকমতো প্রচারণা করে সকলকে জানানো যায় যে, একটি ভালো সিনেমা এসেছে তখন অনেক দর্শকই সিনেমাটি দেখতে আসবেন। তাই সিনেমা সঠিকভাবে নির্মাণের পাশাপাশি সিনেমা হলের পরিবেশও খুব বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে।