রোমানিয়ায় সার্জারির সময় আগুনে পুড়ে এক ৬৬ বছর বয়সী নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। অ্যালকোহল-ভিত্তিক ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংসকারী রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে ওই তার চিকিৎসা চলছিল। এর মধ্যে চিকিৎসকরা একটি ইলেকট্রিক স্কালপেল ব্যবহার করলে ওই নারীর শরীরে আগুন ধরে যায়। পুড়ে যায় তার শরীরের ৪০ শতাংশ। গত ২২শে ডিসেম্বর রাজধানী বুকারেস্টের ফ্লোরিয়াস্কা হাসপাতালে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অবনতি ফুটে ওঠেছে।
ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত চালুর ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
খবরে বলা হয়, সার্জারির সময় চিকিৎসকদের অবহেলা ও অসতর্কতা নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে রোমানিয়াজুড়ে। রাজনীতিবিদ সহ দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্ধৃত করে রোমানিয়ান রাজনীতিবিদ এমানুয়েল উক্সগুরেয়ানু তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, অগ্নিদাহ্য ব্যাক্টেরিয়া নিরোধকের সঙ্গে স্কালপেলের সংযোগে দহনের সৃষ্টি হয় ও রোগী মশালের মতো জ্বলে ওঠেন। আগুন নেভাতে রোগীর শরীরে পানি ঢেলে দেন এক নার্স।
রোমানিয়ার স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী হোয়াতিউ মলদোভান এক বিবৃতিতে বলেন, ইলেকট্রিক স্কালপেল দিয়ে সার্জারির সময় অ্যালকোহল-ভিত্তিক ব্যাক্টেরিয়া নিরোধক ব্যবহার নিষিদ্ধ। সার্জনদের এটা জানা থাকার কথা। এদিকে, নিহতের পরিবার জানিয়েছে, চিকিৎসাকর্মীরা রোগীর মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলে আখ্যায়িত করেছে, তবে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেয়নি।
রোমানিয়ার স্বাস্থ্য খাত ভক্সগুর অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি খাতটিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ার পর কিছুটা উন্নতি আসলেও অভিজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব, যন্ত্রপাতির সংকটে পিছিয়ে রয়েছে চিকিৎসা সেবা। একের পর এক কেলেঙ্কারির ঘটে চলেছে চিকিৎসায়। ২০১৫ সালে দেশটিতে এক নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ৬৪ জন। এর মধ্যে ২৬ জন ঘটনাস্থলে মারা যান। বাকি ৩৮ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায়। তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এ ঘটনায় চিকিৎসা সেবা বিলম্বের অভিযোগ রয়েছে।
আপনার মতামত দিন