নতুন বছরে ইরানকে কোনো শুভেচ্ছা নয়, বরং হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে হামলার জন্য তিনি ইরানকে দায়ী করেছেন। দিয়েছেন হুমকি। বলেছেন, এর জন্য বড় মূল্য দিতে হবে ইরানকে। নতুন বছরের প্রাক্কালে তিনি টুইট করেছেন। বলেছেন, যেকোন রকম ক্ষতি বা প্রাণহানির জন্য খুব বড় মূল্য দিতে হবে ইরানকে। এটা কোনো হুঁশিয়ারি নয়। এটা হুমকি।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরাকের কয়েকজন মিলিশিয়া নিহত হন। এরপরই ক্ষুব্ধ জনগণ ইরাকে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে হামলা চালায়। তারা প্রহরীদের একটি চৌকিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দূতাবাসের অভ্যর্থনা এলাকার সীমা লঙ্ঘন করে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে বাধ্য হয়। এরপর পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এস্পার ঘোষণা দেন, তিনি ওই অঞ্চলে অবিলম্বে প্রায় ৭৫০ জন মার্কিন সেনা মোতায়েন করবেন। এক টুইটে তিনি বলেছেন, বিশ্বের যেকোনো স্থানে আমাদের জনগণ ও স্বার্থকে সুরক্ষা দেবে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে হামলার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানকে দায়ী করলেও ইরান এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। এমন ‘ধৃষ্টতার’ নিন্দা প্রকাশ করে ইরান।
পশ্চিম ইরাক ও সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে ইরান সমর্থিত খতিব হিজবুল্লাহর মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে আকাশপথে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। রোববার চালানো এ হামলায় এ সংগঠনের কমপক্ষে ২৫ জন যোদ্ধা নিহত হন। ইরাকে সামরিক ঘাঁটিতে রকেট হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের একজন বেসামরিক কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিশোধ নিতে এই হামলা চালায় ওয়াশিংটন। জবাবে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলা ইরাকের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে। খতিব হিজবুল্লাহর নেতা আবু মাহদি আল মুহানদিস সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন হামলার জবাব হবে ইরাকে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে কঠোর। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আশা করেন ইরাকের নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা মার্কিন দূতাবাস ও এর স্টাফদের রক্ষা করবে। সেখানে হামলার পর পরই গৃহীত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মাহদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
মার্কিন হামলায় নিহত যোদ্ধাদের লাশ দাফনের পর বাগদানে মঙ্গলবার বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এতে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। এর মধ্যে ছিলেন আবু মাহদি আল মুহানদিস, বেশ কিছু সিনিয়র মিলিশিয়া ও পার্লামেন্ট সদস্য। তারা কড়া নিরাপত্তা সম্বলিত গ্রিন জোন এলাকায় বিক্ষোভ করেন। এই এলাকায় ইরাক সরকার ও বিদেশী দূতাবাসের বেশির ভাগ অফিস। ওই বিক্ষোভকারীদের গ্রিন জোনে প্রবেশে অনুমতি দেয় ইরাকি সেনারা। ফলে তারা মার্কিন দূতাবাসের বাইরে অবস্থান নেয়। আসাইব আহল আল হক-এর প্রধান কায়েস আল খাজালি মার্কিন দূতাবাসকে লক্ষ্য করে বলেছেন, এই দূতাবাস প্রমাণ করেছে যে, তারা ইরাকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এ সময় খতিব হিজবুল্লাহ ও অন্যান্য মিলিশিয়াদের পতাকা উড়িয়ে, মার্কিন বিরোধী স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভকারীরা দূতাবাসের প্রধান ফটকের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। খুলে ফেলে নিরাপত্তামুলক ক্যামেরা। হামলা চালায় প্রহরীবিহীন গার্ড পোস্ট। শুরু করে গুলি করা। দূতাবাসের দেয়াল টপকে ভিতরে প্রবেশ করতেই পরিস্থিতি উত্তেজনাকর হয়ে ওঠে। বার্তা সংস্থা এপির মতে, একটি গেট ভেঙেচুরে দেয়া হয়।