অস্ট্রেলিয়ায় আগ্রাসী দাবানলের থাবায় দুইদিনে নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) অঙ্গরাজ্যে অন্তত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার থেকে উপকূলীয় শহরগুলো পুড়ছে দাবানলে। সব মিলিয়ে পুড়ে গেছে দুই শতাধিক বাড়িঘর। ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের বহু অংশ অচল হয়ে পড়েছে। বুধবার সাময়িক সময়ের পরিস্থিতির উন্নতি হয়। দুই ঘণ্টার জন্য খুলে দেয়া হয় দাবানলের প্রকোপে বন্ধ করে দেয়া একটি প্রধান সড়ক। এর আগে সোমবার দাবানলের অবস্থা এতটাই উগ্র থাকে যে, শহরবাসীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি। অনেকেই সমুদ্র সৈকতে স্থান নেন।
আগুনের লেলিহান শিখায় রক্তিম হয়ে থাকে আকাশ। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, এখনো বহু মানুষ দাবানল আক্রান্ত এলাকায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তাদের সরিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বুধবার এক শহরে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় জাহাজ দিয়ে ১.৬ টন পানি ঢেলেছে পুলিশ। শত চেষ্টা সত্ত্বেও কমছে না দাবানলের আগ্রাসন। বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা। এনএসডব্লিউতে সোমবার থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ভিক্টোরিয়া রাজ্যেও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে সেপ্টেম্বর থেকে অস্ট্রেলিয়াজুড়ে দাবানলে মৃতের সংখ্যা ১৮ জনে পৌঁছেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার থেকে ধ্বংস হয়ে গেছে অন্তত ২১৯টি বাড়িঘর। এর মধ্যে, ভিক্টোরিয়ার ইস্ট গ্রিপসল্যান্ডে ধ্বংস হয়েছে অন্তত ৪৩টি বাড়ি। এনএসডব্লিউতে ধ্বংস হয়েছে আরো ১৭৬টি। বুধবার সকালে এনএসডব্লিউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে এ নিয়ে রাজ্যটিতে ৯ শতাধিক বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরো ৩৬৩টি।
মঙ্গলবার ভিক্টোরিয়ার উপকূলীয় শহর ম্যালাকোটায় আগুন থেকে বাঁচতে সমুদ্র সৈকতে পালান হাজার হাজার মানুষ। এদিন সেখানে নগরবাসীর জন্য জাহাজ দিয়ে ১.৬ টন খাবার, পানি এবং ওষুধ নিয়ে যায় পুলিশ। বহু মানুষ গাড়িতে, খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করেছে। এদিকে, ভিক্টোরিয়ার সানবুরি শহর থেকে সকল বাসিন্দাকে শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। বিভিন্ন শহরে কমে যাচ্ছে খাবারের মজুত। ম্যালাকোটার ক্যান রিভার এলাকায় বাসিন্দারা খাবারের মজুত কমার ব্যাপারে সতর্ক করেছে। এনএসডব্লিউ’র উলাদুল্লায় সুপার মার্কেটগুলোতে প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। সেখানে বন্ধ রয়েছে মোবাইলসেবা ও ল্যান্ডলাইন। পেফোন ব্যবহারের জন্য লম্বা লাইন ধরে দাঁড়াচ্ছেন অনেকে।