আসামে কংগ্রেস বিধায়কদের শতকরা ৯০ ভাগই তথাকথিত বাংলাদেশী বলে অভিযোগ করেছেন আসামের মন্ত্রীপরিষদের সিনিয়র সদস্য হিমান্ত বিশ্বশর্মা। তার ভাষায়, কংগ্রেসের শতকরা ৯০ ভাগ বিধায়ক বাংলাদেশী। তারা এখন হয়তো ভারতের নাগরিক। কিন্তু তাদের পূর্বপুরুষ মুসলিম। তারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছিলেন। বুধবার আসামের ধেমাজি জেলায় এক ‘শান্তি র্যালি’তে তিনি এসব কথা বলেন। মুলত নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের পক্ষে বিজেপি আয়োজন করে এই র্যালি। তবে এদিন আইনটির বিরোধিতাকারী ও পক্ষাবলম্বনকারীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।র্যালিতে যাতে নেতাকর্মীরা যোগ দিতে না পারেন সে জন্য রাস্তায় গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেন আইনটির বিরোধী পক্ষ। এ খবর দিয়েছে ভারতের প্রভাবশালী অনলাইন টেলিগ্রাফ। এতে বলা হয়, বুধবারের ওই র্যালি থেকে ভারতের কংগ্রেস দলকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখা হয়। কংগ্রেস নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের বিরোধিতা করা সত্ত্বেও অভিযোগ করা হয় তারা অবৈধ অভিবাসীদের রক্ষক।
রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের ধর্মঘটের মধ্যে বিজেপির ওই শান্তি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। ধর্মঘটে আসামের জনজীবন অচল হয়ে পড়ে। শুধু বিজেপির পতাকাবাহী বিপুল সংখ্যক বাস ও অন্যান্য যানবাহন নেতাকর্মীদের বহন করে র্যালিতে নিয়ে যায়। এদিন রাজ্য সরকার যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং যেগুলো শিগগিরই বাস্তবায়ন করবে, সে বিষয়ে বক্তব্যে বিশদ বর্ণনা করেন হিমান্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ আয়োজন করা হচ্ছে মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে। তিনি এ সময় জোর দিয়ে বলেন, বিজেপি ও তার মিত্ররা ২০২১ সালে আবার নিশ্চিত ক্ষমতায় ফিরবে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, আপনারা কি আমাকে বিশ্বাস করেন নাকি করেন না? বিজেপি কি ২০২১ সালে আবার ক্ষমতায় ফিরবে নাকি ফিরবে না? আমরা কি ১০০ আসন পাবো নাকি পাবো না? বিশ্ব শর্মা এ সময় জনগণকে হাততালি দিয়ে তার বক্তব্যকে সমর্থন দিতে বলেন।
হিমান্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, তিনি ধেমাজিতে এ যাবত বিপুল সংখ্যক র্যালি ও মিটিংয়ে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু বুধবারের মতো এত জনসমাগম কখনো দেখেন নি। তিনি প্রশ্ন রাখেন, রাস্তার ওপর কি গাছ আর বিদ্যুতের খুঁটি ফেলা হয় নি? তা সত্ত্বেও ধেমাজি জেলার সব মানুষ এই র্যালিতে অংশ নিয়েছেন। এ সময় তিনি নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভকারীদের খোঁচা দিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, যারা ডোনেশনের ওপর টিকে আছেন, তাদের উচিত দোকানোর সাটার বন্ধ করে দেয়া। র্যালিতে যে পরিমাণ মানুষ উপস্থিত হয়েছেন তা স্পষ্ট করে ইঙ্গিত দেয় যে বিজেপি ও তার মিত্ররা ২০২১ সালেও সরকার গঠন করবে। উপজাতি সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিজেপি একটি সেতুবন্ধনে সফল হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। যেসব বুদ্ধিজীবী নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরোধিতা করেন তাদের প্রতি প্রশ্ন রাখেন। বলেন, কেন উপজাতি সম্প্রদায় আপনাদের প্রতিবাদে শরিক হচ্ছে না? কেন কোকড়াঝাড়, ডিফু অথবা হাফলংয়ে কোনো প্রতিবাদ হচ্ছে না?