মাশরফি বিন মুর্তজাকে মাঠেই আনুষ্ঠানিক বিদায় দিবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছেন মাশরাফিকে এমন বিদায় দেয়া হবে যা কেউ কখনো পায়নি, আর পাবেও না। গতকাল বঙ্গবন্ধু বিপিএল থেকে মাশরাফির দল ঢাকা প্লাটুন বিদায় নিয়েছে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে ফের তিনি তার ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হন। বিসিবি সভাপতির আনুষ্ঠানিক বিদায় প্রসঙ্গ আসতেই তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ডের কালকের দিন পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার ছিলাম। এখন আর নেই। আমি সব সময় চিন্তা করি ক্রিকেট বোর্ড খেলোয়াড়দের অভিভাবক। তাদের বিপক্ষে যাওয়াকে আমি কখনোই আমার ক্যারিয়ারের প্রাইড মনে করিনি।
এবং কখনো মনেও করি না। আমি মনে করি একজন খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়া উচিত তার ক্রিকেট বোর্ডকে। বোর্ড চেয়েছে আমার বিদায়ী ম্যাচ বা অবসরের বিষয়ে চিন্তা করার জন্য। আমার পরিষ্কার বার্তা- আমার ইচ্ছা নাই। তবে যদি কখনো সুযোগ আসে তাহলে দেখা যাবে। আবার কার কাছ থেকে নেবো সেটাও কথা।’ তিনি আরো একবার পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন ঢাকঢোল পিটিয়ে বিদায়ের পক্ষপাতি নন তিনি। তবে বিশেষ করে বিদায় দিলে হয়তো থাকবেন।
মাঠ থেকেই বিদায় নিতে হবে এমনটাতে বিশ্বাসও করেন না মাশরাফি। কারণ নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন মাশরাফি যদি তাদের দেয়া আনুষ্ঠানিত বিদায় নিতে না চান তাহলে তাদের কিছু করার নেই। এ বিষয়ে ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, ‘পাপন ভাই তো বলেই দিয়েছেন যে না নিলে কিছু করার নেই। আমি তো আপনাদের বলেছি আমি খেলছি। বারবার আপনারাই আমার খেলাটা নিয়ে আসছেন জাতীয় দলে। বারবার বলছি জাতীয় দল কেন্দ্র করেই কেউ ক্রিকেট খেলে না। সামনে যে খেলা আসবে সেটাই উপভোগ করবো। বিসিবিতে যারা আছে তারা জাতীয় দলের চিন্তা করবে। আর মনে হয় আমার এতটুকু স্বাধীনতা তো আছে যে, আমি খেলতে চাই। কারো জোর করায় তো আমি আর কিছু করবো না। বাংলাদেশে অনেক খেলোয়াড় আছে যারা মাঠ থেকে অবসরে যায়নি। আমার থেকেও বড় খেলোয়াড় আছে। হাবিবুল বাশার সুমন তো বাংলাদেশের হয়ে ক্রাইসিসি মোমেন্টে সব সময় রান করেছে। তিনিও মাঠ থেকে অবসরে যাননি।’
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান জানিয়েছেন বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে মাশরাফি তার নাম স্বেচ্ছায় প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। মাশরাফি বলেন, ‘নতুন কাউকে সুযোগ দেয়ার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সামনে তিন বছর পর বিশ্বকাপ। যে আসবে (কেন্দ্রীয় চুক্তিতে) সে হয়তো ভাববে আমি চুক্তিতে আছি, দায়িত্ব বাড়বে। আমার মতে নতুন কারো কাছে যাওয়াই ভালো।’ গতকাল হাতে ১৪টি সেলাই নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন মাশরাফি। দুদার্ন্ত ক্যাচও নিয়েছেন এক হাতেই। তার এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে যেমন আছে প্রশংসা তেমনি চলছে সমালোচনা। মাশরাফি বলেন, ‘জীবনের চেয়ে ক্রিকেট অবশ্যই বেশি না। তবে ক্রিকেট জীবনের একটা বড় অংশ।’ ক্রিকেটারদের বেতন ভাতা বাড়িয়েছে বিসিবি। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটারদে ম্যাচ ফি দ্বিগুণ করা হয়েছে। এ নিয়ে খুশি মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘খুব ভালো সিদ্ধান্ত। যারা তিন ফরম্যাটের জন্য অ্যাভেইলেভেল থাকবে তাদের বেতন বেশি হবে। ইভেন যারা টেস্ট ক্রিকেটকে বেশি প্রাধান্য দেয় তাদের বেতন বেশি হওয়া উচিত। তাহলে হয়তোবা টেস্ট ক্রিকেটের সিনারিও পরিবর্তন হতে পারে।