পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে প্রায় প্রতি ঘরে দেখা দিয়েছে জ্বর-সর্দি। পরিবারে একজন জ্বরে আক্রান্ত হলে অন্য সদস্যরাও হচ্ছেন দ্রুতই। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, এবারের জ্বর অন্যবারের তুলনায় ভিন্ন। অন্যান্য সময়ে জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি থাকলেও শরীরে ব্যথা ছিল না। এবার অনেকেই শরীরে ব্যথা অনুভব করছেন। একবার শুরু হলে সপ্তাহ পেরিয়েও ছাড়ছে না জ্বর।
এদিকে এই জ্বরে পরিবারের শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। অনেকের তাপমাত্রা কমলেও শ্বাসে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তবে তাদের খুব কমই করোনার পরীক্ষা করাচ্ছেন।
ফলে উপজেলায় কতজন করোনা রোগী আর কতজন মৌসুমি জ্বরে আক্রান্ত তা নিশ্চিত বলতে পারছে না স্বাস্থ্য বিভাগ।
তবে যে জ্বরই হোক না কেন, শুরুতে রোগীকে আইসোলেশনে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন তারা। এতে পরিবারের সদস্যরা এ রোগ থেকে রেহাই পাবেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৮ই মে ঈশ্বরদীতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এ বছরের জানুয়ারীতে ৬২, ফেব্রুয়ারি ৮৪, মার্চ ১০২, এপ্রিল, ৯২ ও মে ৮১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে জুন মাসের ১ হাজার ২৭ জন করোনা আক্রান্ত। এ ছাড়াও উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
পৌর সদরের রহিমপুর এলাকার বাসিন্দা মো. সেলিম বলেন, তার শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম (৫০) ছয় দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। গত মঙ্গলবার সকালে তার জ্বর ৯৯ ডিগ্রি হলেও অক্সিজেন লেভেল ৯৩এ নেমে যায়। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে সিরাজগঞ্জ চৌহালি উপজেলার খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন বুধবার তার নমুনা দিলে করোনা পজিটিভ আসে। সোমবার সকাল পর্যন্ত তার অক্সিজেন লেভেল অপরিবর্তিত ছিল।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসমা খান বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাদের কাছে আসা বেশির ভাগ রোগী জ্বর নিয়ে আসছেন। এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও জ্বরের রোগী বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা।
তিনি আরও বলেন, যারা জ্বর, কাশি ও গলাব্যথায় দুই দিনের বেশি সময় আক্রান্ত রয়েছেন, তারা দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফ্লু-কর্নারে এসে স্যাম্পল দিয়ে যাবেন।