১২৭, ১০৮ ও ১২৪। চার, আট ও পাঁচ উইকেটে হার। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের প্রসন্নতা উধাও। বিশ্বকাপের ব্যাটিং ব্যর্থতা মিরপুরে টেনে এনে মাহমুদউল্লাহরা টি ২০ সিরিজ শেষ করলেন হোয়াইটওয়াশ হয়ে। শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল আট রান। মাহমুদউল্লাহ নিজে বল হাতে তুলে নিয়ে এক ওভারে তিন উইকেট নিলেও বাবর আজমদের জয় আটকাতে পারেননি। প্রতিপক্ষ কোচ সাকলাইন মুশতাক এজন্য বাংলাদেশকে কৃতিত্ব দিতে কুণ্ঠাবোধ করেননি। ‘আমি সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দেব বাংলাদেশকে। এখানকার কন্ডিশন আরব আমিরাত থেকে একেবারে আলাদা। এই কন্ডিশনেও আমাদের ছেলেদের আত্মবিশ্বাস ছিল তুঙ্গে। ওরা নিজেদের দক্ষতার প্রয়োগ ঘটিয়েছে চমৎকারভাবে। ছেলেরা চেষ্টা করছে। সহায়তা করছে পরস্পরকে। একে অন্যের সান্নিধ্য উপভোগ করছে। কঠোর পরিশ্রমে তারা একে অন্যকে ভালো করার প্রেরণা জোগাচ্ছে,’ বলেছেন পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ সাকলাইন।
মাহমুদউল্লাহর প্রতিক্রিয়া, ‘দুদলেরই ব্যাটারদের বেগ পেতে হয়েছে রান তুলতে। এই উইকেটে শুরুতেই রানের জন্য মরিয়া না হয়ে ক্রিজে নিজেকে সময় দেওয়াটাই বিচক্ষণতার পরিচয়।’ অধিনায়কের কথার প্রতিফলন দেখা যায়নি গোটা সিরিজে। বাংলাদেশের ব্যাটাররা যেন রান করতেই ভুলে গেছেন। তাদের ব্যাটে রান যেন ডুমুরের ফল। বাংলাদেশ অধিনায়ক যোগ করেন, ‘নাঈম ভালো ব্যাটিং করেছে। হাতে চোট পাওয়ার পরও তাসকিন যেভাবে ফিরে এসেছে, আমি তার প্রশংসা করি। দারুণ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে সে।’ বাবর আজম ৩-০তে টি ২০ সিরিজ জেতার জন্য কৃতিত্ব দেন তার খেলোয়াড়দের। তিনি বলেন, ‘উন্নতির সুযোগ থাকে সব সময়। যেমন আমরা ফিল্ডিংয়ে উন্নতি করেছি। মিডল অর্ডার আমাদেরকে ম্যাচ জেতাচ্ছে। ভুল যা-ই করি না কেন, আমাদের পরিকল্পনা থাকে সেই ভুলের যেন পুনরাবৃত্তি না হয়। টেস্ট সিরিজে এই মোমেন্টাম আমরা ধরে রাখতে চাই।’
ম্যাচসেরা হায়দার আলীর মতে, ‘ব্যাট করার জন্য উইকেট ছিল দুরূহ।’ সিরিজসেরা মোহাম্মদ রিজওয়ানও উইকেট নিয়ে অভিন্ন অভিযোগ করেন। সেই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেন যে, ‘আমরা যখনই দেশের বাইরে কোথাও খেলতে যাই, ভিন্ন উইকেট পাই। কিন্তু আমরা প্রক্রিয়াটা ঠিক রাখি।’ টি ২০ বিশ্বকাপে ২৮১ রান করা কিপার-ব্যাটার রিজওয়ান বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি ২০ সিরিজে ৯০ রান করেন। বিশ্বকাপেই এক পঞ্জিকাবর্ষে এক হাজারের বেশি রান করেন তিনি টি ২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে। বাংলাদেশের বিপক্ষে সোমবার টি ২০ সিরিজ শেষে এ বছর রিজওয়ানের মোট সংগ্রহ ১,১২৩ রান।
স্কোর কার্ড
বাংলাদেশ
রান বল ৪ ৬
নাঈম ক ও ব ওয়াসিম ৪৭ ৫০ ২ ২
নাজমুল ব শাহনাওয়াজ ৫ ৫ ১ ০
শামীম ক ইফতেখার ব উসমান ২২ ২৩ ৪ ০
আফিফ ক রিজওয়ান ব উসমান ২০ ২১ ০ ২
মাহমুদউল্লাহ ক ওয়াসিম ব হারিস ১৩ ১৪ ১ ০
নুরুল ক উসমান ব ওয়াসিম ৪ ২ ১ ০
মেহেদী নটআউট ৫ ৩ ১ ০
আমিনুল রানআউট ৩ ২ ০ ০
অতিরিক্ত ৫
মোট (৭ উইকেটে, ২০ ওভারে) ১২৪
উইকেট পতন : ১/৭, ২/৩৭, ৩/৮০, ৪/১১১, ৫/১১৬, ৬/১১৬, ৭/১২৪।
বোলিং : মোহাম্মদ নওয়াজ ১-০-২-০, শাহনাওয়াজ দাহানি ৩-০-২৪-১, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র ৪-০-১৫-২, হারিস রউফ ৪-০-৩২-১, ইফতেখার আহমেদ ৪-০-১৩-০, উসমান
কাদির ৪-০-৩৫-২।
পাকিস্তান
রান বল ৪ ৬
রিজওয়ান ব শহীদুল ৪০ ৪৩ ২ ১
বাবর ক নাঈম ব আমিনুল ১৯ ২৫ ২ ০
হায়দার ক নাজমুল ব মাহমুদউল্লাহ ৪৫ ৩৮ ৩ ২
সরফরাজ ক নাঈম ব মাহমুদউল্লাহ ৬ ১২ ০ ০
ইফতেখার ক বদলি ব মাহমুদউল্লাহ ৬ ২ ০ ১
খুশদিল নটআউট ০ ০ ০ ০
নওয়াজ নটআউট ৪ ১ ১ ০
অতিরিক্ত ৭
মোট (৫ উইকেটে, ২০ ওভারে) ১২৭
উইকেট পতন : ১/৩২, ২/৮৩, ৩/১১৭, ৪/১১৭, ৫/১২৩।
বোলিং : মেহেদী হাসান ৪-০-১৯-০, তাসকিন আহমেদ ৩.১-০-১৬-০, নাসুম আহমেদ ৪-০-২০-০, শহীদুল ইসলাম ৩.৫-০-৩৩-১, আমিনুল ইসলাম ৪-০-২৬-১, মাহমুদউল্লাহ ১-০-১০-৩।
ফল : পাকিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : হায়দার আলী।
ম্যান অব দ্য সিরিজ : মোহাম্মদ রিজওয়ান।