মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং গৌরবোজ্জ্বল ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘Club Motorcycle.BD’ দুই’দিনব্যাপী সুন্দর একটি ট্যুরের আয়োজন করেছে।
এবারের ভ্রমন স্থান টাংগাইল নাগরপুর জমিদার বাড়ি, চরসলিমাবাদ,কুসটিয়া বিল।
‘Club Motorcycle.BD’ গ্রুপের Admin and Co-founder ইকবাল সজল এবারের ভ্রমন পরিকল্পনা নিয়ে বলেন, আমরা প্রতিমাসে একটি করে ট্যুরের আয়োজন করে থাকি। তারই ধারাবাহিকতায় এবার আমরা যাচ্ছি টাংগাইল।
ভ্রমণ সম্পর্কে তিনি বলেন, টাংগাইল নাগরপুর জমিদার বাড়ি এর উদ্দেশ্যে আমরা রওনা দিয়ে, সাভার-হেমাতপুর-সিঙ্গাইর হয়ে মানিকগঞ্জ সদর (বেউথা ব্রীজের গোড়ায়) দশ মিনিটের চায়ের বিরতি দেই। তার পর বিরতি শেষে সরাসরি আমরা চলে যাই ধুবড়িয়া আমাদের বন্ধু রিয়াদের বাসায়। সেখানে আমরা সারাদিন খেলাধুলা আড্ডা খাওয়া-দাওয়া ঘুরাঘুরি ও নদীতে গোসল করি।
এদিন রাতে ডিনার শেষ করে মধ্য রাতে বারবিকিউর পার্টি হয়।
ভোরবেলা খেজুরের রস ও সকালের নাস্তা।
এরপর জমিদার বাড়ির উদ্দেশ্যে ঘুরতে বের হই সেখানে কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করে দুপুরের খাবার খেয়ে নদীর পাড় গিয়ে খেলাধুলা করি এরপর সন্ধ্যায় নাস্তা করি ও এদিন রাতে আতশবাজি ও নাচ গানের আয়োজন করা হয়।
এবারের ট্যুরে আমরা মোট ৩০টি বাইক নিয়ে যাই।
দুই দিনের এই ভ্রমণ শেষ করে শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে, সুন্দর মতো ঢাকায় এসে পৌছায়।
বাইকের নিরাপত্তা সম্পর্কে জানতে চাইলে সজল বলেন, আমরা ভ্রমণের ক্ষেত্রে সব সময় যেসকল বিষয়গুলো মাথায় রাখি।
সেগুলো হচ্ছে
প্রথমত হচ্ছে, আমাদের বাইকের সামনে ও পিছনে
দুইজন ফার্স্ট টু লাস্ট কভার দিবে।
সারিবদ্ধ ভাবে সবাইকে বাইক চালাতে হবে, কিন্তু দয়া করে পেছনের জনদের কথা চিন্তা করে চালাবো, সবসময় লুকিং গ্লাসে চোখ রাখতে হবে পিছনে বন্ধু আছে কি-না।
আমরা অনেকেই বাউলি দেই, কিন্তু বাউলির কারণে পাশের ভাইটি হয়তো ভয় পেতে পারে বা পরেও যেতে পারে।
আমাদের ছোট একটা ভুলের জন্য বা বাউলির জন্য এতো সুন্দর প্রোগ্রামটা যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে।
ট্যুর সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সবাই সব সময় ডিসিপ্লিন মেইনটেইন করে চালবো।
সবার বাইকের CC বিষয়টা মাথায় রেখে চালাতে হবে আর হেড লাইট এবং ইন্ডিকেটর লাইট সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে হবে।
একে অপরের মধ্যে যথেষ্ঠ গ্যাপ রেখে বাইক চালাতে হবে, এতে করে এক্সিডেন্ট এর সম্ভাবনা থাকবে না এবং আমাদের সাথে একজন টেকনিশিয়ান থাকে।
ভ্রমণের ক্ষেত্রে কি কি নেওয়া প্রয়োজন জানতে চাইলে সজল বলেন, সর্বপ্রথমে সবাইকে অবশ্যই ভালো মানের ফুল ফেস একটি হেলমেট নিতে হবে এবং যদি পিলিয়ন থাকে তাকেও অবশ্যই হেলমেট পরতে হবে।
শরীরের নিরাপতার জন্য জ্যাকেট, গ্লাভস, সেফটি গিয়ার, বুট এবং যথেষ্ট পরিমাণে জামা কাপড় সাথে নিতে হবে।
বাইকের পেপারস ও ড্রাইভিং লাইসেন্স অবশ্যই সাথে রাখতে হবে।
ক্লাবের টি-শার্ট অবশ্যই পড়ে নিতে হবে আর যদি টি-শার্ট না থাকে সংগ্রহ করে নিতে হবে।
আর অবশ্যই সবাই প্রয়োজন মতো বাইকের মবিল পরিবর্তন করে নিতে হবে, ট্যুরে যাওয়ার আগে ফুয়েল ভরে রাখতে হবে।
মবিল চেক, চাকার হাওয়া, ক্লাচ কেবল, এক্সিলারেটর কেবল, তেলের লাইন, স্পারক প্লাগ, রেডিএটর কুলিং পানি, ব্রেকশো, চেইন লুস, সামনেও পেছনের ব্রেক/হেড লাইট/ব্যাক লাইট / ইন্ডিকেটর লাইট ইত্যাদি চেক করে নিতে হবে সব ঠিকঠাক আছেতো।
আমরা মূলত এই বিষয়গুলোই সবচাইতে আগে প্রাধান্য দিয়ে থাকি।
গ্রুপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের গ্রুপে এখন মেম্বার নয় হাজারেরও বেশি। আমাদের দেশে দেখার মতো অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে। আমরা গ্রুপ ট্যুরের মাধ্যমে সেই জায়গাগুলোতে যাই এবং মানুষ যাতে আমাদেরকে দেখে মানুষের যাতে জায়গাগুলোতে যাওয়ার আগ্রহ জাগে। আমরা অনেকেই বিদেশে ঘুরতে যাই।আমাদের দেশে দেখার মত অনেক সুন্দরতম দর্শনীয় জায়গা রয়েছে। যা আমরা অনেকেই জানিনা। আসুন আমরা বিদেশে না ঘুরতে গিয়ে আমাদের এই জন্মভূমিকে ঘুরে দেখি এবং আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ সম্পর্কে জানি।