স্বামীর ভিটাতে বৃদ্ধাকে ঠাঁই দিচ্ছেন না একমাত্র ছেলে

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই পরিত্যক্ত একটি রান্না ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন শমেলা খাতুন (৮০) নামে বিধবা এক নারী।
অশীতিপর মায়ের ঠাঁই হয়নি একমাত্র ছেলে সন্তানের কাছে। মায়ের জন্য ঘর নির্মাণ করতে গেলে পাষণ্ড ছেলের বাধার মুখে ঘর তুলতে পারেনি মেয়েরা।

জানা যায়, উপজেলার বারবাড়িয়া ইউনিয়নের চাইরপাড়া গ্রামের শমেলা খাতুন (৮০)। ষোল বছর আগে স্বামী আ. জব্বারকে হারিয়ে বিধবা হন শমেলা খাতুন। এক ছেলে ও চার মেয়ের জননী। এক ছেলে আবুল হাশেম(৪৫) পেশায় একজন কবিরাজ। চার মেয়ে বিয়ে পর স্বামী সংসার নিয়ে ব্যস্ত।

অভিযোগ, শমেলা খাতুনের স্বামীর মৃত্যুর পর তার একমাত্র ছেলে আবুল হাশেম জমিজমা লিখে দিতে চাপ প্রয়োগ করে। জমি নিয়ে মা ও ছেলের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। এক পর্যায়ে শমলা খাতুনকে ঘর থেকে বের করে দেয়। বাধ্য হয়ে পাশের রান্না ঘরে অবস্থান নেয়। পাষণ্ড ছেলে মাকে ঘর থেকে তাড়িয়েই ক্ষান্ত থাকেনি। তার মা যে রান্না ঘরে অবস্থান নিয়েছে সেই ঘরের টিনের চালও খুলে নেয় আবুল হাশেম। রোদ,ঝড় আর বৃষ্টি মাথায় করে ভাঙ্গা রান্না ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকে। মেয়েরা মায়ের কষ্ট দূর করতে সিমেন্টের পিলার,কাঠ,টিন ও বাঁশ দিয়ে মায়ের দোচালা ঘর করে দিতে গেলে বাধা দেয় ।স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান একাধিকবার নোটিশ পাঠিয়েও কোন সুরাহা করতে পারেনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মুখলেছুর রহমান বলেন, বৃদ্ধা মাকে কিভাবে তার সন্তান এভাবে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখে চোখে না দেখলে বিশ্বান হতো না।আমি গত কিছুদিন আগে বিষয়টি দেখে অবাক হয়েছি।এরপর থেকে আমি তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাইনি।আমি চেষ্টা করছি তার সাথে যোগাযোগ করতে।

এ বিষয়ে বৃদ্ধার ছেলে আবুল হাশেম বলেন, মায়ের অভিশাপ আমার লাগে না।আমি জীবিত থাকতে ঘর করতে দেব না।

দীর্ঘশ্বাস ফেলে শমেলা খাতুন বলেন, ষোল বছর হয়েছে আমার স্বামী মারা যায়।এরপর ছেলে আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়।আমি পরিত্যক্ত রান্না ঘরে আছি।আমি আমার স্বামীর ভিটাতে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত থাকতে চাই।আমি মেয়েদের সহায়তায় ঘর তৈরি করতে গেলে আমার ছেলে বাঁধা দেয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিতে স্থানীয় ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *