টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে এক বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রকে আটক করে মারধর করেছেন গ্রামবাসী। এ সময় প্রেমিকার বাবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে থানায় নেওয়ার অভিযোগ উঠে পুলিশের বিরুদ্ধে।
তবে পুলিশ বলছে— তাদের কাজে বাধা দেওয়ায় ওই শিক্ষককে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রেমিক যুগলসহ মেয়ের বাবা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে সোমবার বিকালে উপজেলার টাকুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, টাঙ্গাইলের মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার ভর্তি হয়েছেন ওই শিক্ষকের মেয়ে। ধনবাড়ী পৌর শহরের আমবাগান এলাকার ঢাকায় অধ্যয়নরত সাগর (২০) নামে এক ছেলের সঙ্গে ওই ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
সোমবার বিকালে সাগর উপজেলার টাকুরিয়া গ্রামে গিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলছিল। এ সময় স্থানীয়রা তাদের আটক করেন।
স্থানীয় একটি সূত্রের অভিযোগ, সাগরকে আটকিয়ে দফায় দফায় বেদম মারপিট করা হয়। অন্যদিকে দুপক্ষের উপস্থিতিতে বিয়ের আয়োজন করার উদ্যোগ নেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে গ্রামের বাড়ি ধুঁকের কুল থেকে ছেলের চাচা রিপনের নেতৃত্বে কিছু লোকজন এসে সাগরকে ছাড়িয়ে নেওয়ার একাধিকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে থানায় জানায়।
থানা থেকে পুলিশ রাত ১২টার দিকে ওই মেয়ের বাড়িতে গিয়ে একটা মীমাংসা করে থানায় নেওয়ার কথা বললে স্থানীয়রা তাতে রাজি না হওয়ায় পুলিশের সঙ্গে তাদের তর্ক লেগে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেন, পুলিশ একপর্যায়ে স্থানীয়দের ওপর লাঠিচার্জ করলে ভয়ে অনেকে সরে পড়েন। এ সময় প্রধান শিক্ষক তার মেয়েসহ সাগরকে নিয়ে যেতে বাধা দিলে পুলিশ উত্তেজিত হয়ে তাকে গালাগাল শুরু করে।
এ নিয়ে তর্ক বেধে গেলে পুলিশ তাকে মারপিট করে। পরে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে প্রেমিক যুগলের সঙ্গে প্রধান শিক্ষককেও থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এ নিয়ে এলাকায় বেশ তোলপাড় শুরু হয়।
এলাকার রফিকুল ইসলাম নামে অপর এক শিক্ষক জানান, এ ঘটনার সত্যতা জানতে নেতৃবৃন্দদের নিয়ে থানায় অবস্থান করছেন তিনি।
ধনবাড়ী থানার ওসি চান মিয়া জানান, ছেলেমেয়ে দুজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। রাস্তা দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। সেখান থেকে স্থানীয়রা ছেলেমেয়েকে আটকিয়ে একঘরে তালাবদ্ধ করে রেখে দেন। ভাতিজা সাগরকে চাচা রিপন ছাড়াতে গিয়ে স্থানীয়দের মারপিটে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে স্থানীয়রা তাদের ওপরও হামলা করে বলে ওসি অভিযোগ করেন।
ধনবাড়ী পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান বকল জানান, ঘটনা শুনেছি। পুলিশের ওপর স্থানীয়রা নাকি চড়াও হন। এ জন্য তাকে আনা হয়েছে। এ নিয়ে থানায় বসে প্রকৃত ঘটনা জেনে করণীয় নির্ধারণ করা হচ্ছে বলেও মেয়র জানান।