২০২০ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশে প্রথম কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। মিডিয়ার খবর, সরকারি নির্দেশনা ও নিজস্ব সচেতনতা থেকে তখন থেকেই মুখে মাস্ক ব্যবহার করা শুরু করেন সাধারণ মানুষ।
ওই সময় একেকটি সাধারণ মাস্ক ৩০-৫০ টাকা দিয়ে কিনেও ব্যবহার করতে দেখা যায় তাদের। চাহিদা বেশি থাকায় পাইকারি ও খুচরা মাস্ক ব্যবসায়ীরা সবাই বেশ ভালো অংকের অর্থ লাভ করতে সমর্থ হন।
তবে দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সচেতনতা, করোনার প্রাদুভার্ব এবং সংক্রমণ সবই কমে যাওয়ায় কমে গেছে মাস্কের ব্যবহার। ফলে কমে গেছে মাস্ক বিক্রেতাদের আয়ও। এখন যাত্রীবাহী বাস বা দোকানে ৫-৭টি সার্জিক্যাল মাস্ক মাত্র ১০ টাকায় পাওয়া যায়৷ কিন্তু তবুও ক্রেতা পাওয়া যায় না।
একটু লাভ হওয়ায় বাবা-মাকে সাহায্য করতে যমুনা ফিউচার পার্ক সংলগ্ন ওভার ব্রিজে মাস্ক বিক্রি শুরু করে দুই শিশু ও ভাইবোন ৯ বছর বয়সী ইমন ও ১০ বছর বয়সী সাথী।
এই স্থানটি দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ তাদের প্রায় সময়ই ব্রিজটিতে মাস্ক বিক্রি করতে দেখেন। কিন্তু মাস্কের ব্যবহার কমে যাওয়ায় এখন তাদের বিক্রি এবং আয় দুটোই অনেক কমে গেছে৷
শিশু সাথী বলেছে, কয়েক দিন আগে তারা দিনে ৫০০-৬০০ টাকার মাস্ক বিক্রি করতে পারলেও সেটি কমে এসেছে। বর্তমানে তারা ২০০-৩০০ টাকার মাস্ক বিক্রি করতে পারে। ওই ওভার ব্রিজে মাস্ক বিক্রি করা আরেকটি শিশু জানায়, তার আয়ও কমে গেছে।
ইমন ও সাথীর মা ফুটপাতে চা ও সিগারেট বিক্রি করেন। তিনি জানান, পরিবারের বাড়তি কিছু আয়ের জন্য নিজের দুই ছেলেমেয়েকে মাস্ক কিনে দিয়েছিলেন তিনি। তাদের বাবা লিভারজনিত রোগের কারণে অসুস্থ হওয়ার পর কোনো কাজ করতে পারতেন না। ফলে দুই ছেলে ও মেয়েকে মাস্ক বিক্রি করতে দেন।
করোনার শুরু থেকেই তারা দুইজন মাস্ক বিক্রি শুরু করে। ওই সময় দিনে ২৫০০-২৬০০ টাকার মাস্কও বিক্রি করতে পারত তারা। ওই টাকা দিয়ে শিশুদের বাবার চিকিৎসাও করিয়েছেন তিনি।
তবে এখন আয় নেই বললেই চলে। ইমন ও সাথী মাস্ক বিক্রির কারণে স্কুলে যায় না বা কোথাও পড়ালেখাও করে না বলে জানান তাদের মা।