নামাজ ও কোরআন তিলাওয়াতের মতো বহু ইবাদতের আগেই শরিয়ত পবিত্রতা অর্জনের নির্দেশ দিয়েছে। কোনো কোনো ইবাদত শুদ্ধ হওয়ার জন্য পবিত্রতা শর্ত করা হয়েছে এবং কোনো কোনো ইবাদতের ক্ষেত্রে পবিত্রতা অর্জনকে আদব বা শিষ্টাচার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মুসলিম ধর্মতাত্ত্বিকরা এর কারণ বিশ্লেষণ করে বলেন, মুমিনের সব ইবাদত আল্লাহর জন্য নিবেদিত। আর আল্লাহ সত্তাগতভাবে পবিত্র হওয়ায় তিনি পবিত্র ও উত্তম বিষয় ছাড়া কোনো কিছুই গ্রহণ করেন না।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, হে লোকেরা! আল্লাহ ‘তাইয়িব’ বা পবিত্র। তিনি পবিত্র জিনিস ছাড়া কিছু গ্রহণ করেন না। আল্লাহ তাঁর রাসুলদের যেসব বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেন, মুমিনদেরও সেসব বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সত্কাজ করো। তোমরা যা করো সে সম্পর্কে আমি সবিশেষ অবগত। ’ (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ৫১)। তিনি আরো বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমাদের আমি যে জীবিকা দিয়েছি তা থেকে পবিত্র বস্তু আহার কোরো। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৭২; সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৯৮৯)
হাদিসে ব্যবহূত ‘তাইয়িব’ শব্দের ব্যাখ্যায় ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, শব্দটি একই সঙ্গে পূর্ণতা ও পবিত্রতাকে বোঝায়। অর্থাত্ আল্লাহ দোষত্রুটি, অপূর্ণতা ও অপবিত্রতা থেকে মুক্ত। (আল-মাফহামু লি-মা : ৩/৫৮)
আল্লামা ইবনুল কায়্যিম জাওজি (রহ.) বলেন, ‘তাইয়িব আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম। এর মর্মার্থ হলো আল্লাহর সত্তা পবিত্র, তাঁর কাজগুলো পবিত্র, তাঁর গুণাবলি পবিত্র, তাঁর নামগুলো পবিত্র। আল্লাহর থেকে কেবল পবিত্র বিষয়ই প্রকাশ পায়। পবিত্র বিষয়ই কেবল তাঁর কাছে পেশ করা হয়। পবিত্র ব্যক্তিরাই তাঁর নৈকট্য লাভ করতে পারে। তাঁর সব কিছুই পবিত্র এবং পবিত্র বাক্যগুলোই উপস্থাপিত হয়। ’ (কিতাবুস সালাত ওয়া হুকমু তারিকিহা, পৃষ্ঠা ১৮২)
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া