আমাদের মুখমণ্ডলের মধ্যে চার জোড়া বায়ুকুঠরি বা সাইনাস থাকে। এই সাইনাসগুলোর ভেতর থেকে পাতলা মিউকাস নিঃসরণ হয়। এই মিউকাস চিকন নল বা ছিদ্রের মাধ্যমে আমাদের নাকের ভেতর বেরিয়ে আসে এবং এর মাধ্যমে সাইনাসগুলো নিজেরা পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত থেকে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। এই সাইনাসের ভেতর থাকা পাতলা মিউকাস আবরণটিতে যখন প্রদাহ হয় তখন এটিকে সাইনুসাইটিস বলা হয়।
এটি সাধারণত সাধারণ ঠাণ্ডা-সর্দি থেকে শুরু করে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ফাংগাস সংক্রমণের মাধ্যমে হতে পারে। সাইনুসাইটিস যেকোনো সময়, যেকোনো বয়সের মানুষের হতে পারে।
লক্ষণ
♦ নাকে জ্যাম হওয়া
♦ নাকের ভেতর পেছন দিকে ও গলার ওপরের দিকে গাঢ় কফ জমা
♦ মাথা, কপাল, মুখমণ্ডল ও চোখের চারদিকে মাঝারি থেকে তীব্র ব্যথা অনুভূত হওয়া বা ভার লাগা। ব্যথা সকালে একটু কম থাকে, দুপুরের দিকে ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায়, আবার বিকেলের দিকে সামান্য কমে যায়। মাথা নাড়াচাড়া করলে, হাঁটলে বা মাথা নিচু করলে ব্যথা বাড়ে
♦ অনেক সময় দাঁত ও কানেও ব্যথা হতে দেখা যায়
♦ নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ, স্বাদ ও গন্ধ কমে যাওয়া
♦ খুশখুশে কাশি ও গলায় কফ জমা
♦ জ্বর ভাব
♦ দুর্বলতা ও অবসাদ
করণীয়
♦ ডিকনজেসট্যান্ট জাতীয় নাকের ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন।
♦ অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন।
♦ ব্যথা বা জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন খেতে পারেন।
♦ নরমাল স্যালাইন ( নরসল বা সলো ন্যাজাল ড্রপ নামে পাওয়া যায়) দিয়ে নাক ওয়াশ করুন।
♦ প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খেতে হবে, এতে মিউকাস পাতলা থাকে।
♦ গরম পানির ভাপ নিন।
♦ ধূমপান ও ধুলাবালি পরিহার করুন।
♦ পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও খাবার গ্রহণ করুন।
♦ সম্ভব হলে বাসায় হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন।
যদি পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে লক্ষণগুলোর উন্নতি না হয় বা একটানা প্রচণ্ড জ্বর থাকা, চোখে ঝাপসা দেখা ও ফুলে লাল হয়ে যাওয়া, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, বমি ও অজ্ঞান হওয়া, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়, তবে একজন নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. আলমগীর মো. সোয়েব
কনসালট্যান্ট (ইএনটি)
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল