রোববার (১৭ জুলাই) রাজধানীর কাকরাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের হলরুমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, কয়েক বছর আগেও দেশে ডেঙ্গু আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের শক্ত অবস্থান, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরের তদারকি, সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের পরিশ্রমের কারণে ডেঙ্গু এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তিনি বলেন, বিগত দুই তিন বছরে কিছু মানুষ আক্রান্ত হয়েছে আবার দুর্ভাগ্যজনকভাবে কয়েকজন মারাও গেছে। কিন্তু সার্বিকভাবে বিবেচনা করলে পার্শ্ববর্তী দেশ যেমন সিঙ্গাপুর, মালয়শিয়া, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনের তুলনায় আমাদের অবস্থা ভালো ছিল এবং এখনো পর্যন্ত ভালো অবস্থানে রয়েছে।
তাজুল ইসলাম জানান, এ বছর ঢাকায় এখন পর্যন্ত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি। জলাবদ্ধতার কারণে নগরবাসীর যে অবর্ণনীয় কষ্ট হতো সেটি কিন্তু এখন আর নেই। কারণ ঢাকা ওয়াসা থেকে সিটি কর্পোরেশনের কাছে খালগুলো হস্তান্তর করায় দুই মেয়র জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অনেক কাজ করেছেন। অবৈধভাবে দখল হওয়া খালগুলো উদ্ধার করে সংস্কার, খনন/পুনঃখনন ও ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছেন যার কারণেই আজকের এই সুফল।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরসহ সারা দেশে বর্তমানে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে আসে। এটা নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। সরকার বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে এবং খুব শিগগিরই ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, জাতিসংঘ ভলান্টিয়ারের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিলে তারা জানায় বাংলাদেশে কোনো স্বেচ্ছাসেবক নীতিমালা নেই। সংস্থাটির পক্ষ থেকে একটি জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক নীতিমালা প্রণয়নের অনুরোধ জানালে তিনি পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আলোচনা করে তার সম্মতি নিয়ে জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু করেন। নীতিমালা প্রণয়নে ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে অনেকগুলো সভা এবং তৃণমূল ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে এই নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং মন্ত্রিপরিষদে এই নীতিমালা প্রণয়নে নীতিগত সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
বাংলাদেশে বিদ্যমান স্বেচ্ছাসেবার এই মহৎ কাজকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া ও স্বেচ্ছাসেবা প্রদানকারী ব্যক্তিদের স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে অন্যদেরকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবা চর্চার বিষয়টিকে আর গতিশীল করবে। যা জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একটি কৌশল হিসেবে ভূমিকা রাখবে বলেও জানান মন্ত্রী।
দেশের বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য স্বেচ্ছাসেবায় জনসাধারণের প্রবেশ ও স্বেচ্ছাসেবার চর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্রাম বাংলা ও শহরের যে কোনো জলবায়ু, মহামারি, সামাজিক বা অন্য যে কোনো বিপর্যয় থেকে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে। এ পদক্ষেপ নগর ও গ্রামের মানুষের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন, মহামারি, সামাজিক ও অন্যান্য যে কোনো সংকট মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
ইউএনভি বাংলাদেশের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর আকতার উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, একশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর বক্তব্য রাখেন।