মসজিদকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মসজিদ নোংরা করা, অপরিচ্ছন্ন রাখা সবচেয়ে নিন্দনীয় কাজ। আনাস বিন মালিক (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, মসজিদে থুতু ফেলা গুনাহের কাজ, আর তার কাফফারা হচ্ছে তা মুছে ফেলা। (বুখারি, হাদিস : ৪১৫; মুসলিম, হাদিস : ৫৫২)
একবার নবী করিম (সা.) কিবলার দিকে (দেয়ালে) ‘কফ’ দেখলেন। এটা তাঁর নিকটে কষ্টদায়ক মনে হলো। এমনকি তাঁর চেহারায় তা ফুটে উঠল। তিনি উঠে গিয়ে তা হাত দিয়ে পরিষ্কার করলেন। অতঃপর বলেন, তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায় তখন সে তার রবের সঙ্গে একান্তে কথা বলে। অথবা বলেছেন, তার ও কিবলার মাঝখানে তার রব আছেন। কাজেই তোমাদের কেউ যেন কিবলার দিকে থুতু না ফেলে। বরং সে যেন তার বাম দিকে অথবা পায়ের নিচে তা ফেলে। (বুখারি, হাদিস : ৪০৫)
আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) পাড়ায় পাড়ায় মসজিদ নির্মাণ করার এবং তা পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিময় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৫৫; তিরমিজি, হাদিস : ৫৯৪)
আনাস (রা.) বলেন, একদিন আমরা রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে মসজিদ-ই-নববীতে বসে আছি। এমন সময় হঠাৎ এক বেদুইন এসে মসজিদের মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে লাগল, তা দেখে সাহাবি থামো থামো বলে তাকে প্রস্রাব করতে বাধা দিলেন। আনাস (রা.) বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা তাকে বাধা দিয়ো না, বরং তাকে ছেড়ে দাও। লোকেরা তাকে ছেড়ে দিল, সে প্রস্রাব সেরে নিল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে ডেকে বললেন, এটা হলো মসজিদ। এখানে প্রস্রাব করা কিংবা ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না। বরং এ হলো আল্লাহর জিকির করা, সালাত আদায় করা এবং কোরআন পাঠ করার স্থান। (মুসলিম, হাদিস : ৫৪৮)
মসজিদ পরিচ্ছন্ন রাখা একটি মর্যাদাপূর্ণ কাজ। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একজন কালো বর্ণের ব্যক্তি বা নারী মসজিদে ঝাড়ু দিত। লোকটি মারা গেল কিন্তু তার মৃত্যু সম্পর্কে রাসুল (সা.)-কে জানানো হয়নি। একদিন রাসুল (সা.) তাঁর আলোচনায় তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন লোকটি মারা গেছে। তিনি বলেন, তোমরা আমাকে জানাওনি কেন? আমাকে তার কবরটা দেখিয়ে দাও। অতঃপর তিনি তার কবরের কাছে গেলেন এবং তার জানাজার সালাত আদায় করলেন। (বুখারি, হাদিস : ৪৫৮)