বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অর্থনীতিতে যে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে, তার প্রভাব শেয়ারবাজারেও পড়েছে। কয়েক দিনের টানা পতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এখন আতঙ্ক ভর করেছে। আবার ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশের পোর্টফোলির শেয়ার জোরপূর্বক বিক্রি বা ফোর্সড সেলের আওতায় পড়েছে। কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক গতকাল বেশ কিছু বিনিয়োগকারীকে ঋণ সমন্বয়ের চিঠি দিয়েছে। ঋণ সমন্বয় করা না হলে পোর্টফোলিও থেকে কিছু শেয়ার বিক্রি করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের। একদিকে নতুন বিনিয়োগ কমে গেছে, অন্যদিকে বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের মধ্য থেকে বেড়েছে বিক্রির চাপ। দুই মিলে বাজার ছিল নিম্নমুখী।
জানতে চাইলে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষক মোহাম্মদ মুসা বলেন, ‘বর্তমানে শেয়ারবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বড় ধরনের নিষ্ক্রিয়তা রয়েছে। অর্থনীতিতে একধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে। তার প্রভাব ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওপর গিয়ে পড়েছে।
আমাদের বাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আচরণটাই এমন—দাম কমতে শুরু করলে অল্পতেই তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে বাছবিচার ছাড়া শেয়ার বিক্রি করতে থাকেন। আবার যখন দাম বাড়তে থাকে, তখন আবার বাছবিচার ছাড়া শেয়ার কিনতে থাকেন। এ কারণে বড় ধরনের দরপতন শুরু হলে তখন সব শেয়ারের দামই কমে যায়।
ঢাকার বাজারে গতকালও লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ শেয়ার লেনদেন শুরুর অল্প সময়ের ব্যবধানে ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নিয়ম অনুযায়ী, এখন কোনো শেয়ারের দাম এক দিনে ২ শতাংশের বেশি কমতে পারে না।
এ কারণে পতন শুরু হলে আগে আগে শেয়ার বিক্রির জন্য অনেক বিনিয়োগকারী দিনের সর্বনিম্ন দামে শেয়ারের বিক্রয়াদেশ দেন। তাতে শেয়ারের দাম নিমেষেই দিনের সর্বনিম্ন দামে নেমে আসে। তখন আর ক্রেতা পাওয়া যায় না।
বিক্রি করতে চেয়েও অনেকে আর শেয়ার বিক্রি করতে পারেন না। বিশেষ করে বড় অঙ্কের শেয়ার লেনদেন যাঁরা করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে পড়তি বাজারে শেয়ার বিক্রি করা বেশ কঠিন। শেয়ারের বিক্রি কমে যাওয়ায় লেনদেনেও তার প্রভাব পড়েছে।